ঢাকা, শনিবার, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ মে ২০২৪, ১৬ জিলকদ ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

সংবিধান বার বার পরিবর্তন করা যায় না

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
সংবিধান বার বার পরিবর্তন করা যায় না

ঢাকা: সংবিধানকে ইচ্ছা করলেই বার বার পরিবর্তন করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে সহায়ক সরকার বলে কিছু নেই। সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিএনপি অংশ না নিলেও নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।

বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই তরুণ নেতা ও জাতীয় সংসদের সদস্য।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি নেবে না সেটা ওই দলেরই সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

বিএনপি নির্বাচনকালীন যে সহায়ক সরকারের কথা বলছে তার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধানে সহায়ক সরকার বলে কিছু নেই। সংবিধান কোনো খেলনা বিষয় নয়, ইচ্ছা করলেই সংবিধান বার বার পরিবর্তন করা যায় না। তাই বিএনপি সহায়ক সরকারের দাবি করলেই তা বাস্তবায়ন হবে না। বিএনপি না এলেও সংবিধানে যে নির্দেশনা আছে সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা থেমে থাকবে না।

সেই নির্বাচন তো সমালোচনার মুখে পড়তে পারে- এ প্রশ্নের উত্তরে খালিদ মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি নির্বাচনে সব দলই অংশ নেবে। কিন্তু কোনো দল নির্বাচনে আসা, না আসা তো তাদের ব্যপার। বিএনপি ২/৩ বার ক্ষমতায় এসেছে, রাষ্ট্রপরিচালনা করেছে। তাদের ভোটার আছে, সমর্থক আছে। সেই দল যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে বিষয়টা নিয়ে কিছুটা তো আলোচনা হবেই। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তারা অংশ না নেওয়ায় বিভিন্ন আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে বিএনপি ভুল করেছে।

বিএনপি-জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো অনুপ্রবেশকারী নেই। আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র গঠনতন্ত্র মেনে যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি, সন্ত্রাসী ছাড়া যে কেউ এ দল করতে পারে। বিএনপির ভ্রান্ত রাজনীতি, খালেদা জিয়ার ব্যর্থ নেতৃত্বের কারণে কেউ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে যদি আসে তাকে তো বাধা দেওয়া যায় না। তবে এই সুযোগ নিয়ে কেউ দল ও দেশের ক্ষতি করতে না পারে, কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ঢুকছে কিনা সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক।

আওয়ামী লীগে এমন কোনো দুর্বলতা আছে কিনা যা আগামী নির্বাচনে দলের জন্য সমস্যা হতে পারে-এ প্রশ্নের উত্তরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। গত ৭/৮ বছরে দলের নেতৃত্বের বিরাট বিকাশ ঘটেছে। এই নেতৃত্ব যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তবে আগামী নির্বাচনে জয় লাভ আওয়ামী লীগের জন্য সহজ হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। দেশের মানুষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটা নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের সমর্থন এখন অনেক বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বেড়েছে। তাই আমি মনে করি জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকেই ম্যান্ডেট দেবে।

হেফাজত, কওমি মাদ্রাসা ও ভাস্কর্য নিয়ে সরকারের অবস্থানের সমালোচনা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে সেটা থাকবে না। কওমি মাদ্রাসার বিষয় হলো একটা বড় জনগোষ্ঠী আইসোলেটেড। সরকারের দায়িত্ব তাদের মূল ধারায় নিয়ে আসা। অতীতে কিছু রাজনৈতিক দল তাদের ক্রীড়ানকে পরিণত করেছিলো। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদকে উস্কে দেয়। এখন তারা বুঝেছে দাবি আদায়ের অর্থ সন্ত্রাস নয়। একটি গোষ্ঠী যদি সহিংসতা ছেড়ে শান্তির পথে আসতে চায় সরকারের উচিত তাদের সেই পথ দেখানো। এখানে হেফাজতের সঙ্গে আপসের কোনো বিষয় নেই। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্য স্থাপনের আগে আলোচনার বিষয় ছিলো। এই প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর ডিজাইনের সঙ্গে সমাঞ্জস্য বজায় রাখার দরকার ছিলো। সেটা হয়নি। তাই এই ভাস্কর্য স্থাপন কতটুক যুক্তিযুক্ত ছিলো সেটা ভাবার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।