ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

আগামী নির্বাচনের ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
আগামী নির্বাচনের ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

সান্তাহার, বগুড়া থেকে: আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বিরাট পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু সেগুলোর যদি বাস্তবায়ন করতে চাই।

সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। ’

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বগুড়ার আদমদিঘীর সান্তাহার স্টেডিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন, ২০১৯ সালের মধ্যে যে নির্বাচন হবে আপনারা যদি সরকারের চলমান এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে দেবেন, যেন আমরা পুনরায় আপনাদের সেবা করার সুযোগ পাই। ’

তিনি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়েই এ দেশে স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় যখন ভোট দিয়েছে তখন এদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে, মানুষের জীবনে স্বচ্ছতা এসেছে, নৌকায় ভোট দেয়ায় মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে। ’

 ‘নৌকা ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ কিছু পায়। আর ওই ধানের শীষ ক্ষমতায় এলে ধানে চিটা ধরে যায়। খাদ্যে অভাব দেখা দেয়, লুটপাট-দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়। ’

‘ওই লুটেরা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টিকারী, অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলকারী, ওই বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে এদেশের কোনো উন্নয়ন হবে না। সবই থেমে যাবে, নিজেরা খাবে কাউকে কিছু দেবে না। ’

জনগণের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পিতা-মাতা-ভাই সব হারিয়েছি। হারানোর কিছু নেই। শুধু আপনাদের জন্য কাজ করি। আপনাদের মাঝে আমার হারানো পিতা-মাতা-ভাইয়ের স্নেহ খুঁজে পাই। আপনাদের জন্য সব কিছু ত্যাগ করে কাজ করে যাচ্ছি। ’

‘আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না, সবাই পেট ভরে খাবে, রোগে চিকিৎসা পাবে, উন্নত শিক্ষা পাবে। আমার জীবনের লক্ষ্যও একই। ’

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, যখন নৌকা মার্কা জয়ী হয় আমাদের গোলা ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ, খেয়ে পরে মানুষ সুখে থাকে। কিন্তু যখন ধানের শীষ ক্ষমতায় ছিল, তখন তো গোলা ভরা ধান ছিলো না। ’

‘কেন ছিলো না? বিষয়টি পরিষ্কার। ওই বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে শুধু নিজেরা খাবে, নিজেরা পরবে, নিজেরা বিলাসিতা করবে, বিলাস বসনে গা ভরাবে। এরা শুধু মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে জানে আর নিজেরা সম্পদের পাহাড় গড়তে জানে। ’

গণতন্ত্র প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছি। মানুষ শান্তিতে ভোট দিতে পারছে। আর গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই দেশ উন্নতি করছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ’

আওয়ামী লীগ সরকার গোটা বাংলাদেশের সুষম উন্নয়নে বিশ্বাস করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন গোপালগঞ্জে বাজেট দিয়ে তা কেটে নিতো। আমরা এলাকা দেখি না। সুষম উন্নয়নে বিশ্বাস করি। বগুড়ায় যত উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে বেশি হয়েছে। ’

বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন কর্মসূচির সময়কার সহিংসতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা, এটাই নাকি তাদের আন্দোলন। যার মধ্যে এতটুকু মনুষ্যত্ব আছে সে কি পারে মানুষকে পুড়িয়ে মারতে?’

‘এরা বাবার সামনে ছেলে, মায়ের সামনে মেয়ে, সন্তানের সামনে বাবা-মা পুড়ে মেরেছে। এজন্য খালেদা জিয়ার মনে কোনো দুঃখ হয়নি। তিনি নির্দেশ দিয়ে গেছেন। আর তার ছেলাছামুন্ডারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে গেছে। ’

জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারলে জনগণ সমর্থন করে না। প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অভিভাবক, যুবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, সমাজের অভিভাবক প্রত্যেককে বলবো, আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ইসলাম মানুষ খুন করার কথা বলে না। এদেশে কখনো যেন সন্ত্রাসের স্থান না হয়। তার জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলার মাটিতে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। ’

আদমদিঘী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনছার আলী মৃধার সভাপতিত্বে সভায় অন্যদেরর মধ্যে বক্তব্য রাখেন-  ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু, জাতীয় সংসদের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার, সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান, হাবিবুর রহমান, আব্দুল মালেক, সাধন মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল আলম, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ।

জনসভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তারও আগে প্রধানমন্ত্রী সান্তাহারে দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ চালিত ২৫ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক খাদ্যগুদামের উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭/আপডেট ১৭২৯/আপডেট ২১১৪ ঘণ্টা
এমইউএম/এমবিএইচ/টিআই/এইচএ/

আরও পড়ুন
** মানুষ পোড়ালে জনগণ সমর্থন দেয় না
** আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ দেশে উন্নয়ন হয়েছে
** সান্তাহার স্টেডিয়ামের জনসভা মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী​
** প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল অভিমুখে জনস্রোত
** প্রধানমন্ত্রী দুপুরের খাবার সারলেন টাকি মাছ, কালো জিরা ভর্তায়
** প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ব্যানার-তোরণের সাজ সান্তাহারে
** বগুড়ার আরও ১৫ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

** সান্তাহারে সৌরবিদ্যুৎ সুবিধার খাদ্যগুদাম উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।