ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

গাছের বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে কৃষকের স্বপ্ন

সাজ্জাদুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
গাছের বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে কৃষকের স্বপ্ন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লক্ষ্মীপুর: আবহাওয়া অনুকূলে। পোকা-মাকড় ও রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ নেই।

বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় চলছে নিত্য যত্ন। চলছে আগাছা দমন ও সার-ওষুধ প্রয়োগ।

 

এভাবেই দিনে-দিনে একটু একটু করে বেড়ে উঠছে সয়াবিন গাছ। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কৃষকের স্বপ্ন।

 

চলতি মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সোনার ফসল সয়াবিনকে ঘিরে তাই জেলার কৃষকদের স্বপ্নও অনেক।

লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন চলছে সয়াবিনের খেতের পরিচর্যা। সয়াবিন চাষিদের এখন কোনো স্বস্তি নেই। সকাল থেকে বিকেল অবধি, ছাতিফাঁটা রোদে পুড়ে তির-তির করে বাড়ন্ত সয়াবিন গাছের পরিচর্যা করে চলেছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার রামগতি উপজেলার চর আবদুল্লাহ, চরগাজি, চর পোড়াগাছা, চর লক্ষ্মী, চর আলেকজান্ডার, চর বাদাম, চর সীতা; কমলনগর উপজেলার চর ফলকন, চর জাঙ্গালিয়া, চর কালকিনি, চর মার্টিন, চর লরেন্স; সদর উপজেলার চর রমনিমোহন, চর মনসা, চর উভুতি, টুমচর এবং রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জসহ জেলার প্রায় সর্বত্র এবার সয়াবিনের আবাদ হচ্ছে। এছাড়া মেঘনা নদীতে জেগে উঠা নতুন চরগুলোতেও সয়াবিনের চাষ করা হয়েছে।

ওইসব এলাকার কৃষকরা গত কয়েক বছর ধরে রবি মৌসুমে সয়াবিনের আবাদ করে আসছেন। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এবার তারা সয়াবিনের বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন।

একাধিক সয়াবিন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বীজ সংগ্রহ ও বুনতে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি তাদের। আবহওয়া অনুকূলে থাকায় যথাসময়েই বীজ থেকে চারা গজিয়েছে। চারা গজানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর থেকেই আগাছা দমন চলছে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দেওয়া হচ্ছে।

চর মার্টিন এলাকার বর্গাচাষি দীন মোহাম্মদ জানান, খেতের আগাছা পরিষ্কার করে সার প্রয়োগ ও ভিটামিন জাতীয় কিছু ওষুধ স্প্রে করেছেন। এখন পর্যন্ত খেতে কোনো রোগ-বালাই দেখা দেয়নি।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় ৪৮ হাজার ৫১৭ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। এবার ৮৮ হাজার ৩০১ মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে বলে তার আশা।

লক্ষ্মীপুরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ মুরাদ বাংলানিউজকে বলেন, সয়াবিন খেতে প্রতি বর্গফুটে ৫ থেকে ৬টি গাছ রাখা ভালো। ঘনগাছ সরিয়ে ফেলতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোদে জমি শুকিয়ে গেলে-ফুল আসার সময় প্রথম সেচ এবং গুঁটি গঠনের সময় দ্বিতীয় সেচ দিতে কৃষকদের বলা হয়েছে। কৃষকরা পরামর্শ নিয়ে যথাযথ পরিচর্যা করছেন।

কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ফারুক ভূঁইয়া বলেন, পোকা-মাকড় ও রোগ-বালাই যাতে আক্রমণ করতে না পারে সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ সতর্ক রয়েছে। ভালো ফলন পেতে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করতে চাষিদের বলা হচ্ছে।

সয়াবিন তেল জাতীয় শস্য। সয়াবিন গাছ ৩০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছের কাণ্ডে ফুল ধরে। ফুল থেকে শিমের মতো বীজ জন্মে, ওই বীজই মূলত সয়াবিন।   সয়াবিন ভোজ্য তেলের প্রধান উৎস ওই বীজ।

** বরগুনায় গাছের সঙ্গে ধাক্কায় ছাত্রলীগ নেতা নিহত

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।