বেসরকারি খাতে ঋণ চাহিদা নেই। নতুন বিনিয়োগেও যাচ্ছে না বড় কোনো শিল্প গ্রুপ।
সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করা হলেও এটি অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারি বন্ডে বিনিয়োগের ফলে বেসরকারি খাত ঋণ পাচ্ছে না, এমনটি নয়; প্রকৃত তথ্য হচ্ছে- বেসরকারি খাত ঋণ নিচ্ছে না। কারণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যবসাবাণিজ্যে মন্দা, নানা কারণে বেসরকারি খাত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। এটি অর্থনীতির জন্য বিপদের।
বিনিয়োগ নিষ্ক্রিয়তার প্রমাণ মিলেছে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির তথ্যেও। একইভাবে মিলেছে বেসরকারি খাতের ঋণ কমে যাওয়ার তথ্যও। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এপ্রিলে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা আগের মাসের তুলনায় কম। এর আগের মাস মার্চে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে মূলধনি যন্ত্র আমদানির এলসি কমেছে প্রায় ২৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৪১ কোটি ৯১ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৯৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার। বেসরকারি খাতের ঋণ এবং মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমে যাওয়ার তথ্য দেশে বিনিয়োগ নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা নতুন কোনো বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। ব্যবসা সম্প্রসারণেও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না; বরং রড-সিমেন্টসহ অনেক খাতের শিল্পকারখানা ব্যয় হ্রাস করে কোনোভাবে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতেও বড় ঋণের চাহিদা নেই। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সামগ্রিক আমদানি গত বছরের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও মূলধনি যন্ত্রপাতি বা ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানির এলসি খোলা ও এলসি নিশ্চিতকরণ উভয় খাতে নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করছে। এ থেকে বোঝা যায়, বিনিয়োগের পরিবেশ নেই।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন