ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

ড.মনসুরুল আলমকে একুশে মনোনয়নে যুক্তরাষ্ট্রে উল্লাস

কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১২
ড.মনসুরুল আলমকে একুশে মনোনয়নে যুক্তরাষ্ট্রে উল্লাস

নিউইয়র্ক: এবারের একুশে পদকের জন্যে  নিউইয়র্ক প্রবাসী ড. মনসুরুল আলম খানকে (ড. মনসুর খান) মনোনয়নের সংবাদে প্রবাসীরা উৎফুল্ল।

আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী নতুন প্রজন্মকে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা স্কুল-কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জনে নীরবে কর্মরত একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ড. মনসুর খানের এ সম্মানপ্রাপ্তি  প্রবাসীদের সামগ্রিক গৌরব বলে মনে করা হচ্ছে।



সুদূর এ আমেরিকায় বাংলাদেশিদের শিক্ষা বিস্তারে কাজের ব্যাপারেও সরকারের দৃষ্টি প্রসারিত হওয়ায় প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ড. খানকে দু’বছর আগে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়েছে। ড. খানকে একুশে পদকের জন্যে মনোনীত করা হয় শিক্ষায় অসাধারণ অবদানের জন্যে।

তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করে  ড. খান এ সংবাদদাতাকে বলেন, আমি অভিভূত এবং আনন্দিত। আমার এ সম্মাণের জন্য যাদের অনুপ্রেরণা সবচেয়ে বেশী তারা হলেন আমার স্ত্রী নাইমা খান এবং আমাদের একমাত্র সন্তান ডা. ইভান খান।  

বৃহস্পতিবার  ঢাকা থেকে এ সংবাদ জানতে পারেন ড. খান। ওয়েবসাইট পত্রিকায় এ সংবাদ দেখে প্রবাসীরাও আনন্দ-উল্লাস করেন। অসংখ্য প্রবাসী ফোন-মেইলে ড. খানকে অভিনন্দন জানান।

উল্লেখ্য,  গত বছর একুশে পদক পেয়েছেন নিউইয়র্কে আরেক প্রবাসী কবি শহীদ কাদরী।

নিউইয়র্কে ড. খান প্রতিষ্ঠিত ‘খান’স টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে গত ১৬ বছরে প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশি ছেলে-মেয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্যে খ্যাতনামা হাই স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত ‘দ্য ওয়্যাল স্ট্রিট জার্নাল’ এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে খান’স টিউটোরিয়ালের প্রশংসা করে। এর আগে শিক্ষাক্ষেত্রে লিডারশিপের জন্য ইউএস কংগ্রেসের সম্মাননা পত্র পান ড. খান।

নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের অফিস থেকেও তকে বিশেষ স্বীকৃতি পত্র দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ-ইস্ট ফোরাম নামের একটি সংগঠনও ড. খানকে অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন’ তাকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা পদক দিয়েছে।

উত্তর আমেরিকা চট্টগ্রাম সমিতি তাকে প্রবাসে বাংলাদেশি প্রজন্মকে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে আজীবন সম্মাননা পদক দেয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খান’স টিউটোরিয়ালের মোট ৮টি শাখা রয়েছে নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্নস্থানে। গত ৩০ বছর যাবত বিভিন্ন দেশে তিনি শিক্ষকতা করেন। লেখাপড়া শেষে প্রথম চাকরি নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৩-৮৫ মেয়াদে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে কণিষ্ঠতম সদস্য ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ১৯৮৪-৮৫ সালে। তিনি চাকরি করেছেন লন্ডন পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, নিউজার্সি স্টেট ইউনিভার্সিটি, সেটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

১৯৫৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামে তার জন্ম। তার বাবা ছিলেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে সবচেয়ে বেশী সময় অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী খানে আলম খান। মুক্তিযুদ্ধের সময় খানে আলম খানের ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে উজ্জল হয়ে রয়েছে।

ড. খান বলেন, এর আগে যারা এ পদক পেয়েছেন তারা অনেক উঁচু মানের লোক। তাদের একজন হিসেবে আমাকে মনোনীত করা হবে তা আমি ভাবতেও পারিনি। আমি একুশে পদক কমিটির প্রতিও গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি- বলেন ড. খান।

এদিকে প্রবাসে শিক্ষা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করার জন্যে ড. খানকে একুশে পদক প্রদানের জন্যে মনোনীত করায় সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিভিন্ন স্তরের প্রবাসীরা।

অনেকের মুখেই শোনা যাচ্ছে, আজকের দিনটি নিউইয়র্ক প্রবাসীদের জন্যে সত্যি বড় আনন্দের।

ক্যাপশন

নিউইয়র্ক : স্ত্রী নাইমা খান, পুত্র ডা. ইভান খান এবং পুত্রবধু ইভানের সঙ্গে  ড. মনসুর খান। ছবি-পারিবারিক এলবাম

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।