ঢাকা, শুক্রবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালাক্কার মাঝরাতের পাইকারি কাঁচাবাজার

জনি সাহা, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
মালাক্কার মাঝরাতের পাইকারি কাঁচাবাজার মাঝরাতে বসে কাঁচাবাজার, সকাল পর্যন্ত জমজমাট/ ছবি: ডিএইচ বাদল

মালাক্কা, মালয়েশিয়া থেকে: সারি সারি পিকআপ দাঁড়িয়ে। কোনো পিকআপ থেকে নামানো হচ্ছে সবজি, কোনোটায় তোলা হচ্ছে অন্যত্র সরবরাহের জন্য। একপাশের চিত্রের সঙ্গে মিল রয়েছে অপর পাশের। পার্থক্য শুধু পণ্যে। কারণ একপাশে রয়েছে মাছ-মাংস ও ফ্রোজেন আইটেম অন্যপাশে সবজি।

রাত অনুমানিক সাড়ে চারটা, মালাক্কার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পাসার বোরং (PASAR BORONG)। চলছে শ্রমের প্রতিযোগিতা; নারী, পুরুষ সবাই সমানতালে কাজ করছেন।

রাত ২টা থেকে শুরু হওয়া এ বাজার জমজমাট থাকে সকাল ৬টা অবধি। বাজারে রসদ আসা শুরু হয় বিকেল ৫টা থেকে। এ বাজারে ওঠা বাংলাদেশের বিভিন্ন সবজির সঙ্গে ইদানিং পুঁইশাক, লালশাকও পাওয়া যাচ্ছে। আর সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পাশাপাশি পাওয়া যায় বাংলাদেশি মাছ।
মালাক্কার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পাসার বোরং/ ছবি: ডিএইচ বাদলবিশাল এলাকাজুড়ে বসা বাজারে সবজি ও মাছ-মাংসের জন্য রয়েছে আলাদা জোন। ফলে কোনো ক্রেতাকে তার কাঙ্ক্ষিত পণ্য পেতে হয়রান হতে হয় না। আর প্রায় সব দোকনেই পাওয়া যাবে কোনো না কোনো বাংলাদেশি শ্রমিক। যারা অনেক বছর ধরে এখানে কাজ করছেন মালয় মালিকের আস্থাভাজন হয়ে।

মালয়েশিয়ার আরও খবর পড়ুন: জোহর বারুর বিনোদন ‘ডাঙ্গা বে’ 

বগুড়ার শিবগঞ্জের জালাল ১১ বছর ধরে মালয় মালিকের দোকানে সবজির কর্মচারীর কাজ করছেন। বেশ ভালোই পারিশ্রমিক পাওয়া জালাল জানান মালিকের সঙ্গে সম্পর্ক তার ভালো।
মালাক্কার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পাসার বোরং/ ছবি: ডিএইচ বাদলবৈধভাবেই মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা জালাল আরও জানান, স্থানীয় মরিচ বর্তমানে পাইকারিতে কেজি ১৪ রিঙ্গিত (১ রিঙ্গিতে ২০ টাকা), ঝিঙা ৪ রিঙ্গিত, বেগুন ৬ রিঙ্গিত, শসা আড়াই রিঙ্গিত, করলা ৬ রিঙ্গিত, মিষ্টি কুমড়া আড়াই রিঙ্গিত, টমেটো আড়াই রিঙ্গিত, ঢেঁড়স ৫ রিঙ্গিত, পেঁয়াজ ৩ রিঙ্গিত, বরবটি ৯ রিঙ্গিত, পাতা কপি প্রতি পিস আড়াই রিঙ্গিতে বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ১৯ রিঙ্গিতে বিক্রি হচ্ছে ধনিয়া পাতা।

তবে বাজারের এ চিত্র সবসময় একরকম নয় বলে জানান আরেক দোকানের বাংলাদেশি কর্মচারী সেলিম। দাম প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে বলে জানান তিনি।

সবজির বাজার ছেড়ে অপরপাশে আসতেই দেখা গেলো চামড়াসহ ব্রয়লার মুরগি কেটে প্রসেসিং করা হচ্ছে। এসব দোকানের সামনেই সাজানো রয়েছে মুরগির গিলা, কলিজা ও পা। গরুর মাংসও প্যাকেটজাত করে পিকআপে তোলা হচ্ছে।
মালাক্কার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পাসার বোরং/ ছবি: ডিএইচ বাদলএকই সারিতে এবার মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। এসব মাছের মধ্যে রয়েছে কোরাল, লইট্যা, রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির নাম না জানা সামুদ্রিক মাছ। তবে চোখ আটকালো পাশের দোকানে সাজিয়ে রাখা শামুক, ঝিনুক, স্কুইডের দিকে। এরমধ্যেই চীনা এক যুবককে হাত দিয়ে বেছে বেছে একটি একটি করে স্কুইড কিনতে দেখা গেলো।

মালয়েশিয়ার আরও খবর পড়ুন: ** হর্ন-হীন ৩২৯ কিলোমিটার!
কয়েক দোকান পর দেশি তেলাপিয়া, মাগুর, পাঙ্গাস, রুই, কাতল, চিংড়িতে নজর পড়লো। মালয় মালিকের এ দোকানে ৮ বছর ধরে কাজ করছেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের রানা। তিনি জানান, এখানে বাংলাদেশি প্রায় সব মাছই পাওয়া যায়। পাইকারি বাজার বলে দামও কম।
মালাক্কার পাইকারি বাজার পাসার বোরং/ ছবি: ডিএইচ বাদলপ্রায় সব মাছের ট্রের মধ্যে কেজি হিসেবে দাম লেখা রয়েছে। যাতে দেখা গেলো তেলাপিয়া ৫ রিঙ্গিত, পাঙ্গাস ৪ রিঙ্গিত, রুই ৫.৮০ রিঙ্গিত, কাতল ১৩ রিঙ্গিত, মাগুর সাড়ে ৪ রিঙ্গিত প্রতি কেজি।

তবে উল্লেখ করার বিষয় বাংলাদেশের বাজারের মতো এখানে ক্রেতা টানতে বিক্রেতাকে কোনো হাঁকডাক দিতে হয় না। চাহিদার পণ্য কিনতে ক্রেতারাই চলে আসেন নির্দিষ্ট দোকানে। দরদাম নিয়ে মুলামুলির ঝামেলা না থাকায় নেই কোনো বচসার সুযোগ। ​
...
জনি সাহা, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর



বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭
জেডএস/এমজেএফ
...

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।