ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

থাইল্যান্ড

আসিয়ান ও সার্কের সেতু বাংলাদেশ

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৬
আসিয়ান ও সার্কের সেতু বাংলাদেশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্যাংকক (থাইল্যান্ড) থেকে: দক্ষিণ-পূর্ব এশিযার রাষ্ট্রগুলো নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ানের প্রবেশদ্বার থাইল্যান্ড। ওদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সংস্থা সার্কের শেষ সীমান্তে রয়েছে বাংলাদেশ।

তাই বাংলাদেশ আসিয়ান ও সার্কভুক্তদেশগুলোর মাঝে সম্পর্কের সেতু হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

ফলে, এসব দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করবে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে কুইন সিরিকিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে তিনদিনব্যাপী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬- উপলক্ষে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় এমন সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।

দ্বিতীয় দিনের আলোচনা পর্বের প্রথমধাপে আরও উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের শিল্প বিষয়ক ভাইস মন্ত্রী পর্নচাই তারকুলওয়ারানন্ত, থাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী মহাপরিচালক ‍সমদেত সুসম্বুন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম প্রমুখ।

এদিকে, ১০ সদস্যের আসিয়ান জোটে নতুন সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে থাইল্যান্ড।

আর সদস্য হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে চায়। এক্ষেত্রে আসিযান বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি কেন্দ্রস্থল হিসেবে থাইল্যান্ডকে ব্যবহার করতে চায় বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বিনিয়োগ অনেক বেশি। আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশি মায়ানমারও এর অন্যতম সদস্য। বাংলাদেশের উপস্থিতি ছাড়া আসিয়ানকে অপূর্ণ মনে হয়। তাই আমরা আসিয়ানভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। যাতে পূর্ব দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। এতে থাইল্যান্ড অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে।

অন্যদিকে, কাছের দেশ হলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে পরিচিত নয় থাইল্যান্ড। ফলে, এখানকার ব্যবসায়ীরাও জানেন না কী ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে।

তিনদিনব্যাপী আয়োজিত বাংলাদেশ এক্সপো-২০১৬ তে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার যেন বিস্ময় বাড়ছে থাই ব্যবসায়ীদের। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে দুইদেশই একমত হয়েছে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা এ বিষয়ে আশাবাদি।

এ বছরের শেষে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের সপ্তম যৌথ কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি প্যানেল আলোচনায় বলেন,  দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য  ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়বে বলে আশা করি।

তিনি বলেন, থাইল্যান্ড আসিয়ান ব্যবসা ও কানেকটিভিটির কেন্দ্রস্থল। আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নে আমরা থাইল্যান্ডকে ব্যবহার করতে পারি।

বাংলাদেশের প্রায় ছয় হাজার পণ্য থাই বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। তবে, পণ্যের সামঞ্জস্য থাকায় বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্যতে এ সুবিধা মেলে না। তবে, আগামী বছর আবারও থাইল্যান্ড শুল্কমুক্ত পণ্যের তালিকা নবায়ন করবে বলে জানিয়েছে।

থাই সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান শাহরিয়ার আলম। থাইল্যান্ড থেকে সরাসরি উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

কয়েকটি বিশ্ব জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশকে বিনিয়োগ সুবিধার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে উল্লেখ করে পবন চৌধুরী বলেন, শ্রম মূল্য, জমি ও বিদ্যুৎ সুবিধা, বিশ্ব বাজারের জিএসপি সুবিধা প্রভৃতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ অন্যতম বিনিয়োগ গন্তব্য।
তিনি থাই ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান।

থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথভাবে আয়োজিত বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেন্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬-তে  সিরামিক, পাট, পর্যটন, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, গ্লাস এবং অ্যালুমিনিয়াম, টেলি কমিউনিকেশন, চা, সিল্ক, হাতে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে ৫৫টি স্টল দিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৬
জেপি/পিসি

**ঐতিহ্যের সুতোয় বাঁধা বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।