ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

থাইল্যান্ড

‘শার্ট টু শিপ’ রফতানির জগতে থাইল্যান্ডকে আহ্বান

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৬
‘শার্ট টু শিপ’ রফতানির জগতে থাইল্যান্ডকে আহ্বান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্যাংকক থেকে: রফতানি আয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দিক থেকে ‘মিরাকল’ বাংলাদেশ শার্ট থেকে শিপ (জাহাজ) পর্যন্ত রফতানি করতে সক্ষম। বাংলাদেশ এখন রফতানি পণ্যের এক বিরাট জগৎ।

আর সে জগতে প্রবেশ করতে আসিয়ানের প্রবেশদ্বার থাইল্যান্ডকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

সোমবার(৩০ মে) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের কুইন সিরিকিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬’ উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।  

তার সঙ্গে যৌথভাবে এ মেলার উদ্বোধন করেন থাইল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী এপিরাদি টানট্রাপর্ন।  

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসিরুল হামিদ বিপু, ডাক, টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ, থাই চেম্বার অব কমার্স এবং বোর্ড অব ট্রেডের সভাপতি ইসারা ভোগকুসলকিত প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাই বাণিজ্যমন্ত্রী ও অসংখ্য থাই বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ১৯৭২ যেখানে ৬৮টি দেশে আমরা মাত্র ২৫টি পণ্য রফতানি করতাম, সেখানে এখন বিশ্বের ১৯৬টি দেশ আমাদের রফতানি পণ্য ৭২৯টি। যা থেকে আমরা প্রায় ৩১ দশমিক ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে থাকি।  

বাংলাদেশের সেসব পণ্য যাতে থাইল্যান্ডের বাজারে প্রবেশ করতে পারে, থাইরাও যাতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে সেজন্য দেশটির কাছে সব ধরনের সহায়তা চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।  

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি অত্যন্ত বেশি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ৯০ কোটি টাকার (৯শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পণ্য রফতানি করে থাইল্যান্ড। এর বিপরীতে মাত্র ২০-৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা করে বাংলাদেশ। গত অর্থ বছরে তা কিছুটা বেড়েছে। তবে, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে রফতানির পরিমাণ দ্বিগুণ করতে চায়।

বাংলাদেশে শ্রম ও পুঁজিঘন শিল্পের সম্ভার রয়েছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তৈরি পোশাকের মতো প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এগিয়েছে বাংলাদেশ। উন্নত দেশগুলোতে আমরা জাহাজও রফতানি করছি। এসবের পাশাপাশি পাট, চামড়া, সিরামিকস, প্লাস্টিক, ইলেক্ট্রনিক্স, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, হস্তশিল্প, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানির প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।

এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী।  

সোমবার (৩০ মে) সকাল থেকে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগমেলা শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ মেলা দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা বাড়াবে বলে করে উভয়পক্ষ।  

এ প্রসঙ্গে থাইল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী এপিরাদি টানট্রাপর্ন বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছরের ওপর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে। যে কারণে বিগত কয়েক বছরে দুই দেশের বাণিজ্য বেড়েছে। ২০০৬ সালে যা ৫০০ মিলিয়ন ডলার থেকে তা গত বছরে ৯০০ মিলিয়ন ডলারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশিদার। থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমানে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ।  

জাপানের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে থাইল্যান্ডে বিনিয়োগ করেছে। ফলে, তাদের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদনের জন্য তাদের বিনিয়োগ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর অর্থনৈতিক পরিবেশের সম্ভাবনায় এ বিনিয়োগ আকর্ষণের সুযোগ বাংলাদেশের রয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার পরবর্তী যৌথ বাণিজ্য কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করেন তিনি।

সকাল থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ এক্সপো’তে হরেক রকম পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে ৫৫টি স্টল। যেখানে সকাল থেকেই শুরু হয়েছে লোক সমাগম। থাইল্যান্ডে এটাই এককভাবে বাংলাদেশের কোনো মেলা।  

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি এক্সপোতে রয়েছে নানা আয়োজন। তিন দিনব্যাপী এ মেলায় চলবে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা ও পরামর্শ বিনিময়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৬ 
জেপি/পিসি

**নতুন সম্ভাবনার আশায় শুরু বাংলাদেশ এক্সপো

**থাই বিনিয়োগকারীদের অন্যতম গন্তব্য বাংলাদেশ 

**৪৪ বছরে প্রথম!

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।