ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অস্ট্রেলিয়া

সিডনিতে ‘যোদ্ধার মুখে মুক্তির কথা’ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৬
সিডনিতে ‘যোদ্ধার মুখে মুক্তির কথা’ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়া (সিডনি): মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ফোরাম অব অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে সিডনির স্থানীয় একটি ফাংশন সেন্টারে ‘যোদ্ধার মুখে মুক্তির কথা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২৭ মার্চ) বাংলাদেশ ফোরাম অব অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি হোসেন মো. মোহসিন স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়ে।



সম্মিলিত কন্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপরই  মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট দাড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি হোসেন মো. মহসিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন রনির উপস্থাপনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে মুল আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এনায়েতুর রহমান বেলাল, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ ও মুক্তিযোদ্ধা সবুজ আইচ।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উন্মুক্ত এ আলোচনায় অংশ নেন, প্যারামাটা কাউন্সিলের কাউন্সিলর শাহদাত হোসেন, সমাজসেবক ও প্রবীণ রাজনীতিক গামা আব্দুল কাদের, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও জেস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনাম হক, আইনজীবী সিরাজুল হক, মাদার ল্যাঙ্গুয়েজেস কনজারভেসন মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক-এর আহ্বায়ক নির্মল পাল এবং এফএম ৯৯.৯ এর উপস্থাপিকা ড. নার্গিস আক্তার বানু।

এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক ও প্রবীণ রাজনীতিক দেলোয়ার হোসেন, নবধারা নিউজ ডট নেটের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ খোকন, সাংবাদিক কাজী সুলতানা সিমি, তরুণ সমাজসেবক আব্দুস সামাদ শিবলু, আলী বসীর নুর, বাংলাদেশ ফোরাম অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল আউয়াল, যুগ্ম সম্পাদক আশিক আহম্মেদ সৌরভ, প্রচার সম্পাদক এস এম এ ফাহিম, বিএফএ ভয়েসের সৈয়দ ফুয়াদ করিম ফাতেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুল্লাহ খান জোহান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন সরকার, দপ্তর সম্পাদক জাজ মিয়া, রহুল আমিন, হারিস মো. সোহান।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পার্থ থেকে আগত আরিফুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ফোরাম অব অস্ট্রেলিয়াসহ  বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

মুক্তিযোদ্ধা এনায়েতুর রহমান বেলাল তার মায়ের নির্দেশে তিন ভাইয়ের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বর্ণনা দিয়ে বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পৌঁছে দিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই আমি এ অনুষ্ঠানে এসেছি। ভারতের দার্জিলিংয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের মুক্তির জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।

তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে, অন্যকে জানাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে জীবন গড়তে হবে। বাংলাদেশ ফোরাম অব অস্ট্রেলিয়ার এ উদ্যোগের  ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে পাবনা শহরে প্রতিরোধ যুদ্ধের বর্ণনা দেন। ট্রানজিট ক্যাম্পে সহযোদ্ধাদের জাতীয় সংগীত শেখানোর স্মৃতিচারণ করেন। তিনি স্মরণ করেন, মুক্তিযুদ্ধে তার দুই ভাই হারানোর কথা। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তৎকালীন বাঙালি ইপিআর সেনাদের, যারা দেশের জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি ও ব্যাপক প্রাণহানীর জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর থেকে রাজাকার-আলবদর ও স্বাধীনতা বিরোধী দেশীয় শক্তিই বেশী দায়ী ছিল। দেশ নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। এই ব্যাপারে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা সবুজ আইচ তার আলোচনায় সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামানের হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার স্মৃতিচারণ করেন। তিনি ভারতের আগরতলায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসরদের নৃংশসতার কথা তুলে ধরেন। বর্ননা করেন সহযোদ্ধা হারানোর কষ্টের কথা। তিনি মূলত চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে যুদ্ধ করেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বাকি বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব ও ইতিহাস তুলে ধরেন। সবাই এ প্রসঙ্গে সঠিক তথ্য জানার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তারা বাংলাদেশ ফোরাম অব অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসাও করেন।

বাংলাদেশ ফোরাম অব অস্ট্রেলিয়া সভাপতি হোসেন মো. মহসিন বলেন, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনায় বিশ্বাসী প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে এ ধরনের আয়োজন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সংগঠন অস্ট্রেলিয়ায় নবাগত বাংলাদেশি প্রবাসীদের যতদূর সম্ভব সহযোগিতার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৬
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।