ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

লন্ডন

ব্রিটিশ মিডিয়ার তথ্য

জামায়াত সমর্থকের প্ররোচনায় আইএসে বাঙালি কিশোরী

সৈয়দ আনাস পাশা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৫
জামায়াত সমর্থকের প্ররোচনায় আইএসে বাঙালি কিশোরী শারমিনা বেগম

লন্ডন: গত বছরের ডিসেম্বরে প্ররোচিত হয়ে লন্ডন থেকে উগ্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস/আইএস) সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগ দেয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কিশোরী শারমিনা বেগম (১৫)।

বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী সমর্থক সংগঠন ইস্ট লন্ডন মসজিদভিত্তিক মহিলা শাখা ইসলামিক ফোরাম ইউরোপের (আইএফই) দিয়ে প্ররোচিত হয়েই সে আইএসআইএসে যোগ দেয় বলে ব্রিটিশ মিডিয়া জানায়।



আর নিজের যোগদানের তিনমাস পর শারমিনার প্ররোচনাতেই পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত বেথনালগ্রিন একাডেমির আরো তিন কিশোরী আইএসে যোগ দেয়।

শনিবার ব্রিটেনের জনপ্রিয় দৈনিক ডেইলি মেইল এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে।

মেইল’র রিপোর্টে বলা হয়, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মায়ের মৃত্যুর পর শারমিনা নিজের জীবনধারা বদল করে ইস্ট লন্ডন মসজিদে যাতায়াত শুরু করে। সেখানেই তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে আইএফই'র মহিলা শাখা 'সিস্টার্স ফোরাম'র।

এটি সংগঠনের সদস্যদের কাছে 'মুসলিমাত' হিসেবেও পরিচিত। মেইল রিপোর্টার তার তথ্যের সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে শারমিনার আত্মীয়-স্বজনের কিছু মন্তব্য উপস্থাপন করেন তার প্রতিবেদনে।

৭১-এর যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিনের নাম উল্লেখ না করে ইস্ট লন্ডন মসজিদভিত্তিক সংগঠন আইএফই'র বিরুদ্ধে এর আগেও উগ্রবাদ সম্পৃক্ততার বিতর্ক উঠেছে এমন মন্তব্য করে রিপোর্টে বলা হয়, এই সংগঠনটির একজন প্রতিষ্ঠাতা সন্দেহভাজন মুসলিম এক্সট্রিমিস্ট, যিনি ১৮ খুন ও যুদ্ধপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশে অভিযুক্ত।

রিপোর্টে বলা হয়, আইএসের সঙ্গে যোগদান বিষয়ে শারমিনার পরিবার সদস্য ও কোন কোন ইসলামিক লিডার এতোদিন ইন্টারনেট কানেকশনকে দায়ী করলেও পরিবার সদস্যদের কেউ কেউ এখন তাদের নিরবতা ভাঙ্গছেন।

তারা বলছেন, শারমিনা এ পথে যোগ দেয়ার বিষয়ে প্রথম অনুপ্রাণিত হয় ইস্ট লন্ডন মসজিদের ভেতরে। এ বিষয়ে তারা অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন আইএফই'র নারী শাখার দিকে।

তাদের সন্দেহ, মায়ের মৃত্যুর পর শারমিনা যখন মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তখন আইএফই'র কোন উগ্র চতুর নারী শান্তির জন্য সিরিয়া যাওয়ার পরামর্শ দেয় তাকে। শারমিনকে বলা হয়, আইএস এ যোগ দিয়ে শহীদ হতে পারলে সে তার মায়ের কাছে যেতে পারবে। এরপরই শারমিন শপিংয়ের নামে তার দাদীর কাছ থেকে ৫শ’ পাউন্ড চেয়ে নিয়ে সিরিয়ার প্লেন টিকিটের ব্যবস্থা করে, স্কুল প্রজেক্টের প্রয়োজনের কথা বলে পাসপোর্টটিও নিয়ে নেয় দাদীর কাছ থেকে। দুই মাস আগে সিরিয়া থেকে ফোন করে শারমিনা তার পরিবারকে জানায় সে আইএস জঙ্গিকে বিয়ে করেছে। তখন তার বয়স ১৬।

মেইলে সাক্ষাৎকারে শারমিনার বাবা ৩৮ বছর বয়সী মোঃ নিজাম উদ্দিন এইসব বিষয় স্বীকার করলেও আইএস যোগদানে আইএফই বা মসজিদের অনুপ্রেরণার বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে যান। তবে তিনি বলেন, 'আমি পুলিশকে বলেছি শারমিনার পরিবর্তন অবশ্যই তার মায়ের মৃত্যুর পরই হয়েছে'।

শারমিনার বাবা যাই বলুক, তার শালা ৩৫ বছর বয়সী বাকি মিয়ার মতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সন্দেহ আইএফই'র নারী শাখাই শারমিনার মধ্যে আইএস বিষ ঢুকিয়েছে। শারমিনার সৎ মামা বাকি মিয়া বলেন, 'তারা শারমিনাকে বলেছে সিরিয়া যুদ্ধে গিয়ে সে যদি শহীদ হয় তবে মায়ের কাছে যেতে পারবে'।

তিনি বলেন, 'আমি ৫শ’ ভাগ নিশ্চিত, ইস্ট লন্ডন মসজিদই তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। স্কুলের পর অধিকাংশ সময় সে এই মসজিদেই ব্যয় করতো'

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৫/আপডেট: ০৫৪৪ ঘণ্টা.
কেএইচ/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।