ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

লন্ডন

ব্রিটেনের নির্বাচন’১৫

লেবার পার্টির প্রতিই আগ্রহ বাঙালিদের

সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৫
লেবার পার্টির প্রতিই আগ্রহ বাঙালিদের ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: আসছে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচন-২০১৫। আগামী ৭ মে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা চালাচ্ছেন বিরামহীন প্রচারণা।



নিজ দলের নির্বাচনী অঙ্গীকারের পাশাপাশি ভোটারদের কাছে নিজেদের যোগ্যতা উপস্থাপনে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা।

কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টিসহ মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারও ঘোষণা করেছেন। সেই ইশতেহারে রয়েছে ভোটারদের জন্য বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।

মোট সাড়ে চার কোটি ভোটারের মধ্যে এবারের নির্বাচনে ৩০ লাখেরও বেশি নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

নির্বাচনী ফলাফলে বিরাট প্রভাব রাখবে ব্রিটেনে বসবাসরত এথনিক মাইনোরিটি গ্রুপ। মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলো এমনই আভাস দিচ্ছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়ে এবারের নির্বাচনে মোট ১২ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর মধ্যে বর্তমান লেবার দলীয় এমপি রোশনারা আলী ছাড়াও রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দীকসহ অন্যরা।

ঐতিহ্যগতভাবেই ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা লেবার পার্টির সমর্থক। সম্প্রতি তরুণ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশদের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেলেও এবারের নির্বাচনে তাদের বেশি পছন্দ লেবার পার্টি।

ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে বসবাসরত ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশিদের উপর পরিচালিত এক জরিপে এমনটাই জানা যায়।

২শ’ জন ব্রিটিশ-বাংলাদেশির উপর পরিচালিত এক জরিপে ১৪৭ জনই মনে করেন লেবার পার্টিই এথনিক মাইনোরিটি গ্রুপের প্রথম পছন্দ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। এ সমর্থন যারা দিয়েছেন তাদের অধিকাংশই তরুণ।

জরিপে দেখা যায়, এথনিক মাইনোরিটি ভোটারদের কাছে লেবার পার্টি পছন্দের হলেও আগের সেই একচেটিয়া সমর্থন এখন আর নেই।

২০১০ সালের নির্বাচনে পরাজিত লেবার পার্টির পক্ষে ৬৮ ভাগ এথনিক মাইনোরিটির ভোট পড়লেও ১৯৯৭ সালে যেখানে ৭৭ ভাগ ইন্ডিয়ান ভোটারদের লেবার পার্টির সমর্থক ধরা হতো, বর্তমানে সে সংখ্যা মাত্র ৪৫ ভাগ ।

বাংলাদেশিসহ অন্যান্য এথনিক মাইনোরিটি ভোটারদের বেলায়ও একই অবস্থা বলে ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের এক পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়।

ইমিগ্রান্ট ইস্যুতে মূল রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে খুব একটা পার্থক্য না থাকলেও লেবার পার্টির প্রতিই ভরসা রাখতে চান বাংলাদেশি ব্রিটিশ নাগরিকরা।

ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা বিগত কয়েক দশক থেকে লেবার পার্টিকে একচেটিয়া সমর্থন দিয়ে আসলেও বর্তমানে আগের সেই অবস্থা কেন নেই-এমন প্রশ্নের জবাবে তরুণ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নাঈম মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় লেবার পার্টি ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির স্বার্থে ভূমিকা রেখেছে। আমাদের পূর্বপ্রজন্ম মূলধারার তুলনায় অনগ্রসর থাকায় সরকারি ভাতা বা বেনিফিটের প্রতি ভরসা বেশি ছিল।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্ম শিক্ষা-দীক্ষায় নিজেদের যোগ্য করে মূলধারার সাথেই প্রতিযোগিতা করছে। তাদের লক্ষ্য ভাতা বা বেনিফিট নয়, যোগ্যতা অনুযায়ী মূলধারায় সমঅধিকার আদায় করে নেওয়া। সুতরাং কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি অন্ধ নির্ভরতা তরুণ প্রজন্মের নেই।

চোখ-কান খোলা রেখে রাষ্ট্র ও সমাজের বৃহত্তর স্বার্থের চিন্তা মাথায় রেখেই নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা সমর্থনের বিষয়টি বিবেচনা করছেন বলে জানান নাঈম মনসুর।

সর্বশেষ নির্বাচনী জরিপে লেবার পার্টি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিব পার্টি থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করা কারো পক্ষেই সম্ভব হবে না বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে মূল দুইদল কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টি কোন দলের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করবে সে বিষয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

নির্বাচনী দৌড়ে বর্তমানে ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন সরকারের অংশীদার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ছাড়াও নতুন শক্তি হিসেবে এবার আবির্ভূত হচ্ছে ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টি। এছাড়া লেবার পার্টির ঘনিষ্ঠ দল হিসেবে স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিও রয়েছে আলোচনায়।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৫
টিআই/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।