ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসেলে বাঙালির ঈদ আনন্দ আড্ডা

মিল্টন, অস্ট্রেলিয়া থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৪
অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসেলে বাঙালির ঈদ আনন্দ আড্ডা

নিউক্যাসেল (অস্ট্রেলিয়া): ঈদ হয়েছে গত শনিবার। নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে ঈদের নামাজ আদায় শেষে সারাদিন এক বাসা থেকে আরেক বাসায় ঘোরাঘুরি করেই সময় কেটেছে অধিকাংশ বাঙালি পরিবারের।



তবু আড্ডাপ্রিয় বাঙালির কোথায় যেন অতৃপ্তি! সেই অতৃপ্তি ঘোচাতেই ঈদের দ্বিতীয় দিনে নিউক্যাসেলের বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল ‘ঈদ আনন্দ আড্ডা’।

ক্যামেরন পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের শুরুটা হয়েছিল ভাবিদের আনা সুস্বাদু সব খাবার-দাবার আর হরেক রকমের মিষ্টি নিয়ে। নৈশভোজ শেষে উপস্থিত সবাই মেতে ওঠেন প্রাণবন্ত এক আনন্দ আড্ডায়।

‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’ মন্ত্রে ধীরে ধীরে জমে ওঠে আড্ডা। এই আড্ডার না ছিল সুনির্দিষ্ট কোনো ফরমেট, না ছিল গতানুগতিক কোনো উপস্থাপনা। তাই তো এক প্রান্ত থেকে কলি ভাবি যখন বলে ওঠেন- লাকি আখন্দের গান শুনতে খুব ইচ্ছে করছে, তখন অন্যপ্রান্ত থেকে সুগায়ক সাখাওয়াত খান সাগর তাৎক্ষণিক গেয়ে ওঠেন ‘আমায় ডেকো না’।

সাগরের গানের মাঝখানেই নিজের আসন ছেড়ে উঠে আসেন তার সহধর্মিণী সিমি। দুজনের রোমান্টিক নাচ তখন গানের চেয়েও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। পরিচয়ের পর পরই রিদোয়ান খানের অনুরোধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করে শোনান সদ্য নিউক্যাসেলে পিএইচডি করতে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহিতোষ। নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আবৃত্তি করেন নিউক্যাসেলের ক্ষ্যাপাটে যুবক হাফিজ।

কোরবানি ঈদের তাৎপর্য তুলে ধরেন ফারিবা। কবি আবুল হাসনাৎ মিল্টন এ সময়ের তুমুল জনপ্রিয় ‘এ তুমি কেমন তুমি চোখের তারায় আয়না ধরো’ গানটি শুনতে চাইলে খুলনা বেতারের এক সময়ের নিয়মিত শিল্পী আনিকা মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়িয়ে যান।

চাপাই নবাবগঞ্জের অধিবাসী, নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আখতারুজ্জামানের আগ্রহে গম্ভীরা পরিবেশন করেন ইকবাল কবির ও তানভীর। কামাল, আরিফ ও সাগরের পরিচালনায় দর্শকপর্বে নাচ, গান কিংবা অভিনয় করেন শান্তা, হ্যাপী, জনি, রিফাত, নূপুর, সোনালি, সাদ অন্যান্যরা।

সপ্তাহান্তে নিউক্যাসেলের ভাবিদের কাছে আরো বেশি দাওয়াত পাবার আশায় ‘ডিজিটাল ভিক্ষুক’ মামুন, শুভ, খায়রুল, তানভীর ও অন্যান্যদের গান গেয়ে গেয়ে ভিক্ষের পরিবেশনাটি উপভোগ করেছেন সবাই।

‘আমাদের দেশে হবে, সেই ছেলে কবে’ কবিতাটি সিলেট, খুলনা, রংপুর আর ঢাকাইয়া ভাষায় আবৃত্তি করেন যথাক্রমে চম্পক, শুভ, আরিফ ও ইকবাল।

ফখরুল ইসলামের কৌতুক কিংবা পাভেলের আর আরিফের পুঁথি পাঠের ঢঙে পরিবেশিত সংবাদ অথবা আড্ডার ভেতরেও প্রিয় সখী নাজু এবং দীবার একান্ত আড্ডা, সবই ছিল এই সন্ধ্যার অনিবার্য অংশ। আড্ডায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থেকে বাদ যায়নি কেউই, এমনকী নিজেকে ‘বেরসিক’ বলে পরিচয় প্রদানকারী নিউক্যাসেল মসজিদ কমিটির সভাপতি শাহরিয়ারের পরিবেশিত কৌতুকে না হেসে পারেননি কেউ।

অক্টোবর মাসে যাদের জন্মদিন, আড্ডায় কেক কেটে তাদের সবার জন্মদিনও উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ আকর্ষণ ছিল বাংলা ডিজে গানের সাথে নাচের অনুষ্ঠান ‘চল নাচি’। বড়দের পাশাপাশি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে নাচের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ব্যতিক্রমধর্মী এক আনন্দ আড্ডা। ঈদ শেষ হলেও যার রেশ নিউক্যাসেলে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালিদের মনে থেকে যাবে দীর্ঘকাল।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।