ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সৌদি আরব

প্রবাসীদের ঈদ!

সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৪
প্রবাসীদের ঈদ!

রিয়াদ: ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ! এ কথা সবাই মানলেও, প্রবাসীদের জীবনে এর বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন ভিন্নরকম।

প্রবাসে অনেকেই আছেন যাদের জন্য ঈদের দিনটাও কষ্টকর।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের প্রত্যাশা আর প্রস্তুতির কমতি থাকে না। একের পর এক ঈদ আসে যায়, প্রবাসীদের ঈদ রয়ে যায় নিঃসঙ্গতায় ভরা।

ফজরের আজানের পর দল বেঁধে ছোটাছুটি করে গোসল সেরে মিষ্টি মুখে নতুন জামা-কাপড় পরে ঈদগাহ মাঠে যাওয়া প্রবাসীদের জন্য যেন শুধুই স্মৃতি। নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কেউ ডাক দিয়ে বলে না- সেমাই খেয়ে যাও। শত কর্মব্যস্ততার মাঝে ঈদের ছুটিতে লম্বা ঘুম অধিকাংশ প্রবাসীর ঈদের দিনে মূল কর্মসূচি।

ঈদের নামাজ শেষে দেশে ফোন করার পর বুকের ভেতর কষ্টের তীব্রতা যেন আরও বেড়ে যায়। বুকফাটা যন্ত্রণাকে বুকে নিয়ে বিছানায় যেয়ে চোখের পানিতে বালিশ বিজিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেন অনেকে। আর এরপর দুপুর গড়িয়ে পুবের সূর্যটা পশ্চিমে হেলতে শুরু করে। বিছানা ছেড়ে দু’একজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সামান্য আনন্দের প্রত্যাশায় অজানার উদ্দেশ্যে ছুটে চলা। এভাবেই কেটে যায় প্রবাসীদের ঈদ নামের নিঃসঙ্গ বেদনার দিনটি।

কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে তাদের ঈদ ভাবনা নিয়ে কথা হয় বাংলানিউজের। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন ঈদ অনুভ‍ূতির কথা। আর তাতে উঠে এসেছে পরিবারকে কাছে না পাওয়ার কষ্ট আর যন্ত্রণার সুর।

রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক, এনটিভির জেদ্দা প্রতিনিধি মাসুদ সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ মানে আনন্দ হলেও, প্রবাসীদের কাছে তা কষ্টের। জীবিকার প্রয়োজনে প্রিয়জনদের ছাড়া একাকী ঈদ উদযাপন করতে হয়। সবসময় তো বটেই, ঈদের সময় পরিবারের সবাইকে খুব বেশি মিস করি।

‘ঈদের নামাজ পড়ে এসে একটা ঘুম দেই, বিকেল হলে বন্ধুদের নিয়ে সাগর পাড়ে অথবা পার্কে গিয়ে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরে আসি- এই হলো প্রবাসীদের ঈদ’ বলেন মাসুদ সেলিম।

রিয়াদ প্রবাসী অটোক্যাড ইঞ্জিনিয়ার নূর হোসেন বলেন, ১৭ বছরের প্রবাস জীবনে প্রতিটি ক‍ুরবানীর ঈদ দেশে পরিবারের সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করেছি। এবার বিভিন্ন কারণে যাওয়া হয়নি, তাই বেশ খারাপ লাগছে। এবার দেশে যেতে না পারলেও, ফোনে পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
 
বাংলাদেশ কালচারাল ফোরাম, জেদ্দার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পাবেল বলেন, ঈদের সময় পরিবারের সবাইকে খুব মিস করি। বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আনন্দ করে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি।

মদিনা প্রবাসী ফজলে এলাহী বলেন, পৃথিবীতে প্রবাসের কষ্টটা একটু অন্য ধরনের। সব আছে, তবু যেন কিছুই নেই। প্রবাসী না হওয়া পর্যন্ত কেউ তাদের কষ্ট অনুভব করতে পারবে না। প্রবাসীদের কষ্টে বাড়তি মাত্রা যোগ করে ঈদ এবং বিশেষ উৎসবের দিনগুলি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।