ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সৌদি আরব

এমআরপি নিয়ে ভোগান্তিতে সৌদি প্রবাসীরা

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৪
এমআরপি নিয়ে ভোগান্তিতে সৌদি প্রবাসীরা

রিয়াদ: আন্তর্জাতিক এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের শর্তে মতে, ২০১৫ সালের ৩১ মার্চের পর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ছাড়া কাউকেই উড়োজাহাজে ভ্রমণ করতে দেওয়া হবে না। সেই শর্তপূরণে বাংলাদেশ এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং কনস্যুলেট সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের এমআরপি প্রদানের কার্যক্রম শুরু করেছে।

তবে এই কাজের গতি খুবই ধীর।

সরকার প্রবাসীদের দ্রুত পাসপোর্ট দিতে আউটসোর্সিং কোম্পানির মাধ্যমে পাসপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই অংশ হিসাবে গত ১৮ আগস্ট রিয়াদ এবং জেদ্দায় অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আউটসোর্সিং কোম্পানি আইরিশ, কোয়াড এবং কম্পিউটার সোর্স বাংলাদেশ যৌথভাবে সৌদি আরব প্রবাসীদের এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়ার কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, “সরকার চায় না প্রবাসীরা কোনো ধরনের ঝামেলার মধ্যে পড়ুক। তাই নির্ধারিত সময়ে প্রবাসীদেরকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দিতে সরকার আউটসোর্সিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ঘরে বসে এমআরপি পাবেন প্রবাসীরা”।

এরপর একমাস পেরিয়ে গেলেও প্রবাসীদের এমআরপি দেওয়ার ব্যাপারে আউটসোর্সিং কোম্পানির কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। কবে নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হবে তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রবাসীদের মধ্যে।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে প্রতিদিন দূতাবাস এবং কনস্যুলেটে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি। বিশাল সংখ্যক সৌদি প্রবাসীদের সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আর এ নিয়ে প্রায় নিয়মিতই প্রবাসী এবং দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা।

রিয়াদপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঘরে ঘরে পাসপোর্ট পৌঁছানোর দরকার নেই। আমরা যারা দূর-দূরান্ত থেকে দূতাবাসে আসি তাদেরকে সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে না রেখে স্বল্প সময়ে আবেদন জমা নিয়ে নিলেই আমরা খুশি। সাময়িক সময়ের জন্য দূতাবাসের জনবল বৃদ্ধি করে এই কাজটি করা সম্ভব বলেও মত দেন রফিকুল।

এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে জেদ্দা বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এ কে এম শহীদুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, রিয়াদে প্রস্তুতি চলছে, কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে।

এ বিষয়ে জানতে আউটসোর্সিং কোম্পানি আইরিশ এর সৌদি আরবের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মালয়েশিয়ান নাগরিক ফাইজুল ইসলামের সঙ্গে কয়েকদিন চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, উদ্বোধনের পর একদিন আউটসোর্সিং কোম্পানির কর্মকর্তারা দূতাবাসে এসেছিলেন। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। কবে নাগাদ তারা কাজ শুরু করবে সেটা জানাও সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সৌদি প্রবাসীদেরকে এমআরপি দেওয়ার লক্ষ্যে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে অস্থায়ী কিছু জনবল নিয়োগ করে এনরোলমেন্ট (ডাটা এন্ট্রি, ছবি তোলা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট) এর কাজ করে যাচ্ছে দূতাবাস।

উল্লেখ্য, প্রবাসীদের ২০১৫ সালের মধ্যে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দেয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়া ভিত্তিক আউটসোর্সিং কোম্পানি আইরিশ, সৌদি আরবের কোয়াড এবং বাংলাদেশের কম্পিউটার সোর্স এর সঙ্গে প্রতি পাসপোর্ট ৯ ডলার মূল্যে একটি চুক্তি করে। এই ৯ ডলার পাসপোর্টধারী প্রবাসীদেরকে বহন করতে হবে।

বর্তমানে যেখানে ১২০ রিয়াল ফি দিয়ে একটি এমআরপি বানানো যাচ্ছে, আউটসোর্সিং কোম্পানি কাজ শুরু করলে সেখানে দিতে হবে ১৪৭ রিয়াল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।