ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মালয়েশিয়া

বিজনেস ও ক্যাটাগরি-১ ভিসায় মালয়েশিয়া

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৪
বিজনেস ও ক্যাটাগরি-১ ভিসায় মালয়েশিয়া ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়া থেকে ফিরে: এশিয়ার ইউরোপ বলা হয় মালয়েশিয়াকে। সুন্দর মনোমুগ্ধকর ও সামাজিক নিরাপত্তা সম্বলিত আর আর্থিক স্থিতিশীল দেশ মালয়েশিয়া।

এ দেশে এখন অনেকেই নিচ্ছেন নাগরিকত্ব। ইউরোপের মতো জীবনমান হলেও এখানকার জীবনযাপন খরচ কিন্তু বাংলাদেশের তুলনায় খুব বেশি বলা যাবে না। বরং নিশ্চিন্ত জীবনের মূল্যমান চিন্তা করলে কমই বলতে হবে।
 
ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর দেশ মালয়েশিয়া। এখানে মালয়, চায়নিজ আর ভারতীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশিরাও নিজেদের স্থান করে নিয়েছেন। শুধু শ্রমিকই নন, নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ী শ্রেণিও রয়েছে বাংলাদেশিদের।
 
টাইমস স্কয়ার, লয়েট প্লাজা, চায়না মার্কেট বা ওল্ড টাউনই শুধু নয় কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতান আর কোতোরায়াতে বেশ সুনামের সঙ্গেই ব্যবসা করে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা। আবার পেনাং বা মালাক্কার মতো পর্যটন শহরগুলোতেও রয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আধিপত্য।  
 
মালয়েশিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা এখন বেশ উন্নত। এখানকার প্রাথমিক আর মাধ্যমিক শিক্ষাতো পশ্চিমাদের স্ট্যান্ডার্ডেরই। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এখন বিশ্বমানের। তাই সন্তানের মানসম্পন্ন লেখাপড়ার জন্যেও সঠিক পছন্দ হতে পারে মালয়েশিয়া।
 
মালয়েশিয়ার এসব সুবিধা পেতে হলে ভিনদেশিদের নিতে হয় ক্যাটাগরি-১ ভিসা। প্রবাসীদের জন্যে এখানে সবচেয়ে সন্মানজনক ভিসা হচ্ছে এই ক্যাটাগরি-১ ভিসা।
 
ক্যাটাগরি-১ ভিসার সুবিধা: ক্যাটাগরি-১ ভিসাধারী প্রবাসীরা প্রায় মালয় নাগরিকের সমান সুবিধাই পাবেন। তাদেরকে মালয়েশিয়ায় ট্যাক্স পেয়ার সিটিজেন হিসেবে সন্মান করা হয়।
 
এ ভিসাধারীরা মালয়েশিয়ায় নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই গাড়ি এবং বাড়ির জন্যে লোন নিতে পারবেন। সুতরাং সেখানে বাড়ি কেনার সুবিধাতো থাকছেই।

এটা হচ্ছে উচ্চমানের ভিসা ক্যাটাগরি। এ ভিসাধারী প্রবাসী নিজ সন্তানদের মালয়েশিয়ার সরকারি স্কুলেই পড়াশোনা করাতে পারবেন। যেটা অনেক সময় সেকেন্ড হোমের প্রবাসীরাও পারেন না।
 
সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এ ভিসাধারী ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যেই পি.আর. (পারমানেন্ট রেসিডেন্স) এর আবেদন করতে পারবেন। আর ব্যাংক স্টেটম্যান্টসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ১০০ তে ৬৫ বা তার বেশি পয়েন্ট উঠাতে পারলে ভিসাধারী সহজেই পেয়ে যাবেন নাগরিকত্ব।
 
যেভাবে পাবেন ক্যাটাগরি-১ ভিসা: প্রক্রিয়া খুবই সহজ। শুধুমাত্র জানার অভাব আর দালালের খপ্পরে না পড়লেই হলো। খোঁজখবর নিয়ে ভালো এজেন্টের শরণাপন্ন হতে হবে। এক্ষেত্রে পরিচিত এবং অভিজ্ঞ এজেন্ট অবশ্যই বাছাই করতে হবে।
 
যা যা লাগবে: ক্যাপিটাল গর্ভনেন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় শিক্ষিত বাংলাদেশি, উচ্চ প্রোফাইলধারী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের এ ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সেবা দিচ্ছে।
 
চিফ কনসালট্যান্ট অ্যাডভোকেট রাজু বাংলানিউজকে জানান, ক্যাটাগরি-১ ভিসার আবেদন করার জন্যে নিজের স্বাক্ষরকৃত জীবনবৃত্তান্ত, শিক্ষাজীবনের সব সার্টিফিকেটের ফটোকপি, কাজের অভিজ্ঞতা, পরিবারের বিস্তারিত (স্ত্রী এবং সন্তানদের) বিবরণ জমা দিতে হবে।
 
বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র স্নাতক সম্পন্নরাই এ ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন। সুতরায় স্নাতক সম্পন্ন করার সার্টিফিকেটের ফটোকপি অবশ্যই জমা দিতে হবে।
 
সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ৬ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। এছাড়াও পাসপোর্টের সব পাতার ফটোকপিও জমা দিতে হবে।
 
স্থানীয় কমিশনারের স্বাক্ষরকৃত চারিত্রিক সনদপত্রও প্রয়োজন হবে। এছাড়াও দেশের ব্যাংক একাউন্টের স্টেটমেন্ট এবং স্থানীয় টেলিফোন বা কারেন্টের ইউটিলিটি বিল প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি।
 
ব্যবসায়ী রেসিডেন্স ভিসা: অ্যাড. রাজু বলেন, ব্যবসায়ী রেসিডেন্স ভিসার জন্যে কোম্পানি লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। এ লাইসেন্স পেতে প্রার্থীর নামে ট্যাক্সের রেজিস্ট্রেশন করে দিতে হয় এজেন্টকে। অনুমোদিত কোম্পানির মাধ্যমেই সরকারি দপ্তর থেকে লোকাল কোম্পানির লাইসেন্স নিতে হবে।
 
এছাড়াও ল’ইয়ার কোম্পানি এবং জয়েন্ট স্টোক কোম্পানির অ্যাপ্রোভালও নিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব থাকে এজেন্টের ওপর।
 
সময় লাগবে কতদিন?

সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কাগজপত্র ঠিক হয়ে গেলে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন অফিস এজেন্টের মাধ্যমে প্রার্থীকে তলব করে। তখনই মালয়েশিয়া পৌঁছে ইমিগ্রেশনে যেতে হয় প্রার্থীকে।
 
মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন অফিসে ১ ঘণ্টার মধ্যেই ভিসা হাতে দেয়।
 
খরচ: ক্যাটাগরি-১ ভিসা পেতে একজন প্রার্থীকে ৫ লাখ টাকার মতো খরচ করতে হবে। বিজনেস রেসিডেন্স হলে সে ক্ষেত্রে ৭ লাখ টাকার মতো খরচ করতে হবে প্রার্থীকে।
 
এখানে দেশি-বিদেশি দালালদের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারাতেও হচ্ছে অনেক সময়। অসংখ্য দালাল এজেন্ট বিভিন্ন প্রার্থীর কাগজপত্র জাল করে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনে জমা দেওয়ার ফলে নিরীহ প্রার্থীদের নাম ও পাসপোর্ট নম্বর কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় তারা আর ভিসা পান না। তাই এজেন্টের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ভিসা প্রসেসিংয়ের বিষয়গুলো আগে জেনে নেওয়া ভালো।
 
গত এক যুগ ধরে ব্যবসায়ী রেসিডেন্স ও ক্যাটাগরি-১ প্রফেশনাল রেসিডেন্স প্রদানে দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিয়েছে ক্যাপিটাল গর্ভনেন্স। সততা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে শতভাগ সফলতার সঙ্গেই বাংলাদেশি প্রার্থীদের সেবা প্রদান করছেন বলে জানান রাজু।
 
তিনি বলেন, অন্যায়ের আশ্রয় না নিয়ে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাগজপত্র দাখিল করলে কোনো প্রার্থীর আবেদনের ফাইল রিজেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এক্ষেত্রে সততা বড় বিষয়।
 
তিনি বলেন, ভালো এজেন্ট মূলত মালয়েশিয়ার হালনাগাদ কাগজপত্র বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশি প্রার্থীদের রেসিডেন্স অনুমোদন সেবা দেওয়ার কাজে লাগায়।
 
ক্যাটাগরি-১ ভিসা সর্ম্পকে আরো জানতে এবং করণীয় সর্ম্পকে খোঁজ নিতে ভিজিট করুন www.category1-residence.comওয়েবসাইটে। এছাড়াও  [email protected]  এবং [email protected] মেইলে প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন বিস্তারিত।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৪ জুলাই ২৪, ২০১৪ আপডেট সময়: ১০০১ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।