ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মালয়েশিয়া

বাজারের নাম বালাকং

মাজেদুল নয়ন, সাজেদা সুইটি ও মাহমুদ খায়রুল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৪
বাজারের নাম বালাকং ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: জোহর বারু কেটিএম স্টেশনে নামি বিকেল ৪টায়। এক ঘণ্টা দেরি।

ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মারা’র অধ্যাপক এবং সিনিয়র ফরেনসিক কনসালট্যান্ট নাসিমুল ইসলাম অপেক্ষা করছিলেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর আস্থা রেখে বুঝতে পারি, রাগ বেশি করবেন না। আমরা তিনজনই ঘুষ হিসেবে মুখভর্তি হাসি নিয়ে উপস্থিত হল‍াম ‍তার সামনে।
 
বললেন, শোনো মজার একটা জায়গায় নিয়ে যাবো তোমাদের। বাংলাদেশিরা বাজার করেন সেখানে। আর এসব কারণেই নাসিমুল ইসলামের সঙ্গে থাকাটাই আমোদের।
bulakong_3 
স্টেশন থেকে বিশ মিনিটের পথ। গাড়ি থেকে নামতেই মুরগীর কক্করও কক্করও আওয়াজ। দোকানদার বাংলাদেশি, পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন চায়নিজ মালিক। জিজ্ঞাসা করলাম মুরগী দেশি? দোকানদার হাসলো।
 
বাজারে ঢুকতেই মনে হলো দেশের কারওয়ান বাজার। ‘সাতু’ ‘সাতু’ আওয়াজ। ছোট ছোট প্লেটে এখানে সবজি বিক্রি হয়। যেমন একটা প্লাস্টিকের প্লেটে ৩টা শশা। দাম এক টাকা, যেটাকে বলছে ‘সাতু’।
bulakong_7 
নিউমার্কেটের মতোই দাম হাকাচ্ছে বিক্রেতারা। মাছের বাজার, মাংসের বাজার। এখানে সব হালাল, কারণ সবাই বাংলাদেশি এবং বেশিরভাগ ক্রেতাই মুসলিম। কই মাছ, অনেকদিন ধরে ফ্রিজে রাখা ইলিশ মাছ, তেলাপিয়া আরও হরেক ধরনের মাছ।
 
বাজারে রয়েছে চৈনিক আর মালয়ী দোকানদারও। তারা শিখে গেছে বাংলাদেশিদের সুর। চায়নিজ দোকানদের মুখ থেকে বের হচ্ছে, ‘এই দুই টাকা, দুই টাকা’। তাদের কথা শুনে হাঁ করে তাকিয়ে থাকি।
bulakong_5
লাল টমোটো সামনে রেখে ইন্দোনেশিয়ান সব্জি বিক্রেতা হাকঁছেন, ‘এই তমেতো, তমেতো...। ’
 
এ বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা রিঙ্গিত বলে কম। সবাই রিঙ্গিতকে টাকা বলে।
bulukong_9 
‘সাতু-দুকা, তিনকা-পে…’ মানে এক প্লেট ২ রিঙ্গিত আর তিন প্লেট ৫ রিঙ্গিত। বলে হাঁক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এখানে বিক্রেতাদের অর্ধেকই নারী। মালয়ী নারীরা যে তাদের পুরুষদের তুলনায় বেশি পরিশ্রমী বোঝা যায় এখানেও।
 
এখানে ওজন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে না সব্জি। বরং প্লেট হিসেবে। ক্রেতা পছন্দানুযায়ী প্লেট বেছে নিচ্ছেন।
bulakong_6 
নাসিমুল ইসলামের পকেট থেকে বের হলো বাজারের লিস্ট। আর আমাদের হাতে ঝুললো শশা, আনারস, বেগুন।
 
লিচু উঠেছে বেশ। আমাদের দিনাজুপরের লিচুর চেয়েও বড়। লিচু বিক্রি করছেন এক নারী। তিনি একটু বামে ফিরতেই মুহ‍ূর্তের মধ্যে একটি লিচুর খোসা ছাড়িয়ে মুখে পুরে নিলেন নাসিমুল ইসলাম। চোখ টিপ মেরে বললেন, ‘এটা ফাও, দেখেনি। ’

 

Nayan_Sweety_01
 

 

 

 

 

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।