কুয়ালালামপুর: গত ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক মালয় ভাষা বক্তৃতা প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশসহ এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ৭২টি দেশের ৮০ জন প্রতিযোগী।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া প্রধানমন্ত্রী মো. নাজিব বিন রাজ্জাক ও তার স্ত্রী রোসমাহ মান্সুর।
মালায় ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পৃথিবীর সকল দেশের মানুষের মাঝে মালয় ভাষার পরিচিতি বৃদ্ধি করাই এ প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য।
প্রতিযোগিতায় ৩টি রাউন্ড পার করে অংশগ্রহণকারীদের পৌঁছাতে হয় চূড়ান্ত পর্বে।
বাংলাদেশের হয়ে এবার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন মো. আতিউল্লাহ। বাবার নাম মো. আব্দুল্লাহ এবং মা আলেয়া খাতুন। ২৪ বছর বয়সী আতিউল্লাহ সেজেছিলেন মালয় পোশাকে। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন তিনি।
২০১৩ সালেও প্রতিযোগিতার তৃতীয় রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। অবশ্য এবারে তার সাফল্য কিছুটা কম। থেমে গেছেন দ্বিতীয় রাউন্ডেই।
আতিউল্লাহর বক্তৃতার বিষয় ছিল, “বাহাসা জিওয়া বাংসার” যার অর্থ – ভাষা হল জাতির সত্ত্বা।
বাংলা ভাষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে সকল প্রতিযোগীই বাংলা ভাষা সম্পর্কে জানেন। বাংলাদেশকে অনেক বড় দেশ মনে করে। মালয় ভাষার সাথে তুলনা করলে আমাদের বাংলা ভাষার ইতিহাস অনেক গর্বের, অনেক গভীর। যদি বাংলাদেশে এ রকম কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায়, আন্তর্জাতিক আসরে বাংলা ভাষার পরিচিতি অনেক বাড়বে।
অনুষ্ঠান শেষ হয় স্থানীয় সময় রাত ১১ টায়। ফেরার পথে মনে পরছিলো দেশের কথা। বাংলাদেশি এক পরিবারের সাথে কথা হয়েছিল কয়েকদিন আগে।
বাবা–মা’র অভিযোগ, তাদের ১৩ বছর বয়সী সন্তান বাংলায় অনেক খারাপ। বাংলা ভাষা শিক্ষা শিখতে তার মোটেই ভাল লাগে না। এখন দেশে শুধু পরীক্ষা পাসের জন্য বাংলা ব্যবহার হয়। বাংলা-ইংরেজি ভাষার মিশ্রণ অহরহ। ইতিহাস তো দূরের কথা, ২১শে ফেব্রুয়ারি যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সেটাও অনেকের জানা নেই। বাংলা ভাষায় কথা বলতেও অনেকের কষ্ট হয়।
রাত গভীর হয়ে আসে। কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাষা শহীদদের কাছে মনে মনে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৪