শুধু নামেই তেজগাঁও বিমানবন্দর!

ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১০

ঢাকা : বর্তমানে তেজগাঁও বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা করে না। এমনকি বিমানবন্দরটি উড়োজাহাজ ওঠানামার উপযোগীও নয়, নেই কোনো অবকাঠামো। মাঝে মধ্যে কিছু হেলিকপ্টার ওঠানামা করে থাকে। কিন্তু সরকারিভাবে এটি এখনো বিমানবন্দর।

এটি কাগজে কলমে এখনো বিমানবন্দর হিসেবে চিহিৃত থাকায় তেজগাঁও, শুলশান এলাকায় নিয়ম অনুযায়ী ৬তলার বেশি উচুঁ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ রয়েছে। সম্প্রতি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বিমানবন্দরটিকে শুধুমাত্র হেলিপ্যাড হিসেবে ঘোষণা করে বহুতল ভবন নির্মানের ওপর বিধিনিষেধ তুলে নিতে বলেছে।

তবে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর (অব:) ইকবাল হোসাইন। তিনি বলেন, একটি বিমানবন্দরকে কখনোই নষ্ট করে ফেলা ঠিক নয়।  

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকরা আকাশযুদ্ধের জন্য এই বিমানবন্দর নির্মাণ করে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটি বেসামরিক বিমান পরিবহন বন্দর হিসেবে চালু হয়। ১৯৮১ সালে বর্তমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি দেশের প্রধান বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। নতুন বিমানবন্দর চালু হওয়ার পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তেজগাঁও বিমানবন্দরটি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ সরকার ঢাকা ও বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় রয়্যাল ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের বিমান ঘাঁটি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ১৯৪১ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৪৩ সালে নির্মাণাধীন তেজগাঁও বিমানবন্দরে একটি হালকা যুদ্ধ বিমান অবতরণ করে। যুদ্ধের পর এটি বিমানবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে। একই সময়ে ফেনী, রাজেন্দ্রপুর, পাহাড়কাঞ্চনপুর, চকোরিয়া ও রসুলপুরে একই ধরনের সামরিক বিমানবন্দর নির্মিত হয়। কিন্তুু এগুলোকে আর বেসামরিক বিমানবন্দরে রুপান্তরিত করা হয়নি।

বর্তমানে তেজগাঁও বিমানবন্দরটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বাশার বেসের অংশ। এটি এখনো সরকারিভাবে বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হলেও বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ওঠানামার কাজেই এটি মূলত ব্যবহৃত হয়। এছাড়া দু’একটি বেসরকারি উড়োজাহাজ প্রশিক্ষণ কোম্পানি এটিকে ব্যবহার করে থাকে।  

বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ এয়ার কমোডর (অব:) ইকবাল হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, তেজগাঁও বিমানবন্দরের টেক অফ ফানেল, অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় অনেক ভবন তৈরি হওয়ায় উড়োজাহাজ অবতরণ কিংবা উড্ডয়ন ঝুঁকিপূর্ণ। তবে জরুরি ভিত্তিতে কোনো উড়োজাহাজ নামার জন্য বিমানবন্দরটি রাখা যেতে পারে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যদি কোনো উড়োজাহাজ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পারে কিংবা কাছাকাছি বিমানবন্দরে যাওয়ার মতো জ্বালানি না থাকা উড়োজাহাজ এই বিমানবন্দরকে ব্যবহার করতে পারে।  

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী বলেন, বিমানবন্দরটির বিষয়ে কিছু করতে হলে সরকারি সিদ্ধান্ত হতে হবে। এ প্রসঙ্গে এর বেশি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বাংলাদেশ সময় ১৭৪৭ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১০


সম্পাদক : জুয়েল মাজহার

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2024 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান