মান্না থাকলে এমন দিন দেখতে হতো না: কাজী হায়াৎ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০৯:২৯, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
কাজী হায়াৎকে ‘চলচ্চিত্রের বাবা’ বলে ডাকতেন মান্না

কাজী হায়াৎকে ‘চলচ্চিত্রের বাবা’ বলে ডাকতেন মান্না

জনপ্রিয়তার একেবারে তুঙ্গে থাকাবস্থায় আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ঢাকাই চলচ্চিত্রের নন্দিত অভিনেতা মান্না। তার প্রয়াণে বেশ ধাক্কা খায় দেশের চলচ্চিত্র শিল্প। ঢালিউডের অনেক বোদ্ধার মতে, ক্ষতির সেই ছাপ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি এদেশের চলচ্চিত্র।

সেই সুরেই জনপ্রিয় নির্মাতা ও অভিনেতা কাজী হায়াৎ বলছিলেন, ‘মান্না থাকলে হয়তো এমন দিন দেখতে হতো না। ইন্ডাস্ট্রিতে সে আরও ভালো ও সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারতো’।

মান্না প্রয়াত হওয়ার দশম বার্ষিকী শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি লাখো ভক্তকে কাঁদিয়ে ইহধাম ত্যাগ করেন মান্না। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা কাজী হায়াৎ।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে দাপিয়ে বেড়ানো মান্না প্রসঙ্গে তার ‘আম্মাজান’ ছবির পরিচালক হায়াৎ বলেন, ‘মান্না বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নতুন একটি ধারা সৃষ্টি করে ছিলেন। তার অসংখ্য ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে তরতর করে এগিয়ে দিচ্ছিলো। কিন্তু মান্নার চলে যাওয়ার সঙ্গে চলচ্চিত্রের একটি ধারারও সমাপ্তি ঘটে’।

১৯৮৫ সালে ‘পাগলী’ চলচ্চিত্রে মান্নাকে অভিনয়ের সুযোগ দেন প্রায় অর্ধশত চলচ্চিত্রের নির্মাতা কাজী হায়াৎ। তারপর এই জুটি ‘তাণ্ডবলীলা’, ‘দেশদ্রোহী’, ‘দেশপ্রেমিক’, ‘যন্ত্রণা’, ‘দাঙ্গা’, ‘ত্রাস’, ‘সিপাহী’, ‘আম্মাজান’, ‘ধর’, ‘কষ্ট’, ‘লুটতরাজ’, ‘তেজি’, ‘মিনিস্টার’, ‘সমাজকে বদলে দাও’, ‘বর্তমান’, ‘পাঞ্জা’সহ ইত্যাদি চলচ্চিত্র উপহার দেন ঢালিউডকে।

কাজী হায়াৎ প্রথম পরিচয় স্মরণ করে বলেন, ‘মান্নাকে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে অনুষ্ঠানে দেখে আমার ভালো লাগে। পরে যখন ‘পাগলী’ চলচ্চিত্রটি হাতে নিলাম, তখন তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবতে পারছিলাম না। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করার প্রস্তাব যখন মান্নাকে দেই, শুরুতে সে বিশ্বাসই করতে পারছিল না। পরে শ্যুটিংয়ে গিয়ে তার বিশ্বাস হয়’।

মান্না’র সঙ্গে শেষ কাজটির কথা আজও কাজী হায়াৎ’র মনে পড়ে। জীবনের শেষ শটটি মান্না করেছিলেন তার সঙ্গেই। ‘গরীবের ছেলে’ চলচ্চিত্রের শ্যুটিং সেটের ঘটনা। 

হায়াৎ বলছিলেন, ‘চলচ্চিত্রটিতে আমি অভিনেতা ছিলাম। সেদিন রাতে শ্যুটিং শেষ হয়। মান্না শট শেষ করে ফটোগ্রাফারকে ডাক দিলো। আমার পাশে দাঁড়িয়ে ফটোগ্রাফারকে বললো, হায়াৎ ভাইয়ের সঙ্গে আমার একটি ছবি তুলে দাও। ফটোগ্রাফার ছবি তোলার পর আমার সঙ্গে হাত মিলিয়ে মান্না বিদায় নিলো। যাবার সময় বলে গেলো, ‘কাল আবার দেখা হবে’। কিন্তু আর দেখা হলো না। সেই দেখাটাই ছিলো আমাদের শেষ দেখা। এর পরদিনই মান্না পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। অসমাপ্ত চলচ্চিত্রটিতে পরে কাজী মারুফ অভিনয় করে।’

চলচ্চিত্রের বাইরেও মান্নার সঙ্গে কাজী হায়াৎ’র পারিবারিক সম্পর্ক বেশ দৃঢ় ছিলো। কাজী হায়াৎকে তিনি তার ‘চলচ্চিত্রের বাবা’ বলে সম্বোধন করতেন। মান্নার মৃত্যুর পর বেশ ভেঙে পড়েছিলেন হায়াৎ। এখন শারীরিকভাবেও দিন ভালো যাচ্ছে না তার।

মিলাদ ও কোরআনখানি
এই চিত্রনায়কের মৃত্যুবার্ষিকীতে ‘মান্না ফাউন্ডেশন’র উদ্যোগে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরায় তার বাসায় বাদ আসর বিশেষ মিলাদ মাহফিল ও কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়েছে। 

এছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকেও আয়োজন করা হয়েছে মিলাদ মাহফিলের।

১৯৬৪ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন মান্না। তার প্রকৃত নাম এস এম আসলাম তালুকদার। প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেন। পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা-পদক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
জেআইএম/এইচএ/


সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান