সিগারেটকে সুবিধা দিয়ে বিড়িকে ধ্বংস করা হচ্ছে

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০৫:৫৯, জানুয়ারি ৩, ২০১৮
বিড়ি কারখানায় কর্মরত শ্রমিক

বিড়ি কারখানায় কর্মরত শ্রমিক

সিগারেটকে বেশি সুবিধা দিতে বিড়ি শিল্প ধ্বংস করার জন্য প্রতি বাজেটে বিড়ির ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিড়িতে যে হারে ট্যাক্স বাড়ছে সে হারে সিগারেটে ট্যাক্স বাড়ছে না, এমন দাবি বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের।
 

সংগঠনটির তথ্য মতে, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে নিম্নস্তরের সিগারেটের ওপর প্যাকেট প্রতি ট্যাক্সের পরিমাণ ছিলো ৫০ শতাংশ। আর বিড়ির ওপর প্রতি হাজারে (৪০ প্যাকেট) ট্যাক্সের পরিমাণ ছিলো ৩০.৯০ শতাংশ। তবে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নিম্নস্তরের সিগারেটের ওপর প্যাকেট প্রতি ট্যাক্সের পরিমাণ ৬৭ শতাংশ, আর বিড়ির ওপর প্রতি হাজারে ট্যাক্সের পরিমাণ ২৪৭.৫০ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে সংগঠনটির দাবি বিড়ি শিল্পকে ধ্বংস করতে প্রতি বাজেটেই বিড়ির ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হচ্ছে।  

বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন আরও বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিম্নস্তরের সিগারেটে প্যাকেট প্রতি ট্যাক্সের পরিমাণ ছিলো ৫০ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরে ২ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫২ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে প্রতি হাজার বিড়িতে ট্যাক্সের পরিমাণ ছিলো ১৫৭.২৮ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৯০.২২ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৪৭.৫০ শতাংশ। 

অন্যদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমদামি সিগারেটের প্যাকেট প্রতি মূল্য ছিলো ২৩ টাকা, যা চলতি অর্থবছরে ৪ টাকা বেড়ে হয়েছে ২৭ টাকা। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৫ শলাকা বিড়ির দাম ছিলো ৭.১০ টাকা, যা চলতি অর্থবছরে ৫.৪০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১২.৫০ টাকা। অর্থাৎ সিগারেটের চেয়ে বিড়ির ওপর শুল্কের পরিমাণ প্রতি অর্থবছরের বাজেটে বেড়েছে।  

এদিকে ২০০০ সালে বাংলাদেশে বিড়ি কারখানার সংখ্যা ছিলো প্রায় ২২০টি। আর বিড়ি উৎপাদন হতো প্রায় ১১ হাজার কোটি শলাকা। তখন বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ছিলো প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ। বর্তমানে বিড়ি ফ্যাক্টরির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯০টিতে। তবে বিড়ি উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ২৫ কোটির মতো। অন্যদিকে বিড়ি শিল্পে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখে। 

এ বিষয়ে রংপুর আজিজ বিড়ির ম্যানেজার মো. সামছুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কারখানার অধিকাংশ শ্রমিক নারী। যারা বিড়ি বানানো ছাড়া আর কোনো কাজ জানেন না। এখন যদি বিড়ি শিল্প বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এই শ্রমিকরা বেকার হয়ে যাবে। তাই বিড়ি শিল্প রক্ষায় বিড়ির ওপর ট্যাক্স কমাতে হবে। নয়তো বিড়ির কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে শ্রমিকরা বেকার হওয়ার পাশাপাশি অমানবিকভাবে তাদের জীবন-যাপন করতে হবে। 
 
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমকে বাঙালী বলেন, আমরা ধূমপানের পক্ষে নই, তবে বাংলাদেশে ধূমপান থাকলে বিড়িও থাকবে। কেননা বিড়ি সম্পূর্ণ একটি দেশীয় পণ্য। আর সিগারেট তৈরি করা হয় মেশিনের সাহায্যে। যার ফলে বিড়ির মতো লাখ লাখ শ্রমিক কাজের সুযোগ পায় না। তাই বিড়ি শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে বিড়ির ওপর থেকে ট্যাক্স কমাতে হবে। তবে একটি মহল বিড়ি শিল্পকে ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছে।   

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা সবসময় শ্রমিকদের সুখ দুঃখের কথা চিন্তা করেন। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী বিড়ি শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে বিড়ির ওপর প্রতি বাজেটে যে বৈষম্য হচ্ছে তার সমাধান করবেন। নয়তো বিড়ি শ্রমিকরা রাজপথে নেমে তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।   
   
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩,২০১৮ 
এসজে/জেডএস


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান