বিশ্বের বিপজ্জনক ৫ আগ্নেয়গিরি

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০১:৫২, নভেম্বর ৪, ২০১৭
ইতালির ভিসুভিয়াস

ইতালির ভিসুভিয়াস

ঢাকা: আগ্নেয়গিরি সবসময়ই মারাত্মক ঝুঁকির। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে মৃতের সংখ্যাও এখন পর্যন্ত কম নয়। এ সব আগ্নেয়গিরির মধ্যেও রয়েছে ভিন্নতা। কোনোটা বেশি বিপজ্জনক, কোনটা কম। সবচেয়ে বিপজ্জনক ৫টি আগ্নেয়গিরির গল্প নিয়েই সাজানো এ প্রতিবেদন।

ভিসুভিয়াস, ইতালি
মাউন্ট ভিসুভিয়াস ইতালির নেপলস উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি আগ্নেয়গিরি। নেপলস থেকে ৯ কিলোমিটার পূর্বে সমুদ্রউপকূলের খুব কাছে এর অবস্থান। এটি ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে অবস্থিত একমাত্র আগ্নেয়গিরি।

তিন মিলিয়ন মানুষের বসবাস করার স্থানে ভিসুভিয়াস একটি বড় বিপত্তির নাম। ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির কারণেই খ্রিস্টপূর্ব ৭৯ শতকে ধ্বংস হয়েছিল শহরের পমপেই ও হারকুলিনিয়াম নামের দু’টি জাতি।
আগ্নেয়গিরিটির তলদেশ পূর্ণ রয়েছে বিভিন্ন গ্যাস ও ছাই দ্বারা। ফলে এটি ফাটলে তার গ্যাস ও ছাই ছড়িয়ে পড়বে আকাশে প্লেন ওড়ার শেষ সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত ও আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হবে গলিত লাভার বন্যা।
কঙ্গোর নিরাগঙ্গ আগ্নেয়গিরিনিরাগঙ্গ, কঙ্গো
আফ্রিকার কেন্দ্রীয় এ আগ্নেয়গিরিটি গত কয়েক দশকে বেশ কয়েকবার অগ্ন্যুৎপাত ঘটিয়েছে। এটি যখন বিস্ফোরিত হয়, তখন এটি মূলত ছাইয়ের পরিবর্তে এক ধরনের আঠালো লাভা বের করে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটি যদি একবার বিস্ফোরিত হয়, তবে তা সাবধানবাণী ছাড়াই তার আশপাশের বৃহৎ একটি অঞ্চলকে প্লাবিত করতে পারে।
২০০২ সালে এটি সর্বশেষ লাভা উদগিরণ করে। এসময় লাভার স্রোতের গতি ছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার এবং তার গভীরতা ছিল ২ মিটার পর্যন্ত; যা কঙ্গোর নিকটবর্তী শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছিল।
মক্সিকোর পপো আগ্নেয়গিরিপপো, মেক্সিকো
বিশ্বের বৃহত্তম শহরগুলোর অন্যতম হলো মেক্সিকো সিটি। এখানে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষের বসবাস। শহরের মাত্র ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমেই অবস্থিত অন্যতম ক্ষমতাধর আগ্নেয়গিরি পপো। আগ্নেয়গিরিটি প্রায় নিয়মিতভাবেই সক্রিয় থাকে। সবশেষ ২০১৬ সালে এটি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে তার ছাই উদগিরণ করে। 

আগ্নেয়গিরিটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য বিস্ফোরণের অধিকাংশ সময়ে এটি লাভার পরিবর্তে ছাই বের করে। ছাই পানিতে মিশে পুরু কাদায় পরিণত হয়ে দ্রুতগতির সঙ্গে বহুদূর পর্যন্ত প্রবাহিত হতে পারে।
১৯৮৫ সালে ‘দেল রুইজ’ নামে কলম্বিয়ায় এ ধরনের একটি দুর্ঘটনায় প্রায় ২৬ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এসময় এর বিস্তৃতি ছিল প্রায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
ইন্দোনেশিয়ার ক্রাকাটাউ আগ্নেয়গিরিক্রাকাটাউ, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল দুটি দ্বীপ জাভা ও সুমাত্রার মাঝামাঝি পর্যায়ে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি ক্রাকাটাউ। দূর থেকে যা দেখলে একটি সমাধিক্ষেত্র ছাড়া অন্যকিছুই মনে হয় না।
১৮৮৬ সালে অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষের প্রাণ নিয়ে কুখ্যাত হয় আগ্নেয়গিরিটি। এ অগ্ন্যুতপাত ছিল হিরোশিমার পারমাণবিক বোমার থেকেও প্রায় ১৩শ গুণ বেশি শক্তিশালী। অগ্ন্যুতপাতের ফলে আগ্নেয় দ্বীপটি সে সময় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর মৃত দ্বীপটি পুনরায় জেগে উঠতে সময় লেগেছে ৫০ বছরেরও বেশি।
 চীনের সাংবাইহাং আগ্নেয়গিরিসাংবাইহাং, চীন
সাংবাইহাং নামের আগ্নেয়গিরিটি এশিয়ার দূরবর্তী অংশে অবস্থিত। আগ্নেয়গিরিটির শেষ অগ্ন্যুৎপাত হয় ১৯০৩ সালে। এ আগ্নেয়গিরিটির একটি গল্পও আছে। খ্রিস্টপূর্ব ৯৬৯ সালে এটি যে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়, তা দশ হাজার বছরের ইতিহাসে বিরল। এমনকি ১৮৮৬ সালে ক্রাকাটাউ থেকে তিন গুন বেশি শক্তিশালী ছিল সেটি।
ধারণা করা হয়, আগ্নেয়গিরিটির তলদেশ নয়টি লাভা হ্রদের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি নয় কিউবিক কিলোমিটার আয়তন সম্পন্ন। সে হিসেবে এটি যদি বিস্ফোরিত হয়, এর পার্শ্ববর্তী এক লক্ষ মানুষের বসবাস সম্পন্ন জায়গা ধ্বংস হবে।
২০০০ সালের শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা আগ্নেয়গিরিটি নিয়ে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। তারা নিশ্চিত যে, এর কার্যকলাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ফলে এই শতকের শেষের দিকে তা একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
এইচএমএস/এএ


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান