যে কারণে আমরা টিকে থাকা একমাত্র মানব প্রজাতি

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০২:৪৬, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
ছবি: সংগৃহিত

ছবি: সংগৃহিত

২০ লাখ বছর আগেও আফ্রিকায় ঘুরে বেড়াতো মানুষের বিভিন্ন প্রজাতি। কিছু প্রজাতির মাঝে আশ্চর্যজনক মিল থাকলেও অন্যরা ছিল স্বতন্ত্র সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।

২০ লাখ বছর আগেও আফ্রিকায় ঘুরে বেড়াতো মানুষের বিভিন্ন প্রজাতি। কিছু প্রজাতির মাঝে আশ্চর্যজনক মিল থাকলেও অন্যরা ছিল স্বতন্ত্র সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।

আজ আর আমাদের নিজস্ব প্রজাতি আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্স ছাড়া হোমিনিদের কোনোটিই টিকে নেই, বিলুপ্ত হয়ে গেছে চিরতরে। অবশ্য আমাদের সবচেয়ে নিকট আত্মীয় বনমানুষের ছয়টি প্রজাতি আজ জীবিত- বনোবো শিম্পাঞ্জি, দুই প্রজাতির গরিলা এবং দুই প্রজাতির ওরাংওটাং।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টোনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন শিয়া বলেন, ‘লাখ লাখ বছর আগে যখন বহুসংখ্যক হোমিনিন প্রজাতি বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করতো, তারা প্রধানত উদ্ভিদ খেয়ে বাঁচতো। তাই বৃহ‍ৎ প্রাণীগুলো ক্ষুদ্রগুলোকে শিকার করে ধ্বংস করেছে, তার কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু এটি সুস্পষ্ট যে, বিশ্বে শুধুমাত্র মানুষের একটি প্রজাতিই টিকে আছে। এর কিছু সংকেতও রয়ে গেছে যে, কেন আমাদের কিছু পূর্বপুরুষ অন্যদের তুলনায় বেশি সফল ছিল’।
ছবি: সংগৃহিত
‘পরিবর্তিত অবস্থা এবং বন ও গাছ থেকে কমে যাওয়া, পানির উৎসস্থল শুকিয়ে ও সরে যাওয়ায় তারা ক্রমবর্ধমান মাংসাশী হয়ে ওঠে। তারপরও বেশ কিছুদিন আগে পর্যন্ত মানুষের বিভিন্ন প্রজাতি ভাগাভাগি করে থাকতো। সমস্যা ছিল, শিকারের পশু ও গাছপালা কম থাকায় সামগ্রিকভাবে খাবারের কাছাকাছি কম যেতে পারা। এ প্রতিযোগিতায় কিছু প্রজাতির বিলুপ্ত ঘটেছে’।

যেমন ৩০ হাজার বছর আগে থেকে গুটিয়ে গেছে তিনটি হোমিনিন প্রজাতি- ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার নিয়ান্ডারথাল, এশিয়ার ডেনিসোভান এবং ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরিস দ্বীপের হোবিটস্‌রা।

আধুনিক মানুষেরা তাদের আবাস দখল করায় নিয়ান্ডারথালরা ৪০ হাজার বছর আগে বাস্তুচ্যুত হয়। এর ওপরে ইউরোপের দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়ে হারিয়ে গেছে চিরতরে। একটি বড় সংখ্যক নিয়ান্ডারথালের খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা সংকোচনও তাদের জায়গায় আধুনিক মানুষ দ্রুত প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

একটিমাত্র দ্বীপের বাসিন্দা হোবিটস্‌ ১৮ হাজার বছর আগে বড় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতে অপনোদিত হয়।
ছবি: সংগৃহিত
দক্ষিণ আফ্রিকার গুহামানব হোমো নালেদিরাও বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রতিকূল পরিবেশে। জার্মানির সিংহ মানব লোওয়েনমেনস্কও বাস করতো গুহায়। ৪০ হাজার বছর আগে তারা হারিয়ে গেছে চিরতরে।

আমাদের সরাসরি পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাস ও তার আগের প্রজাতি হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস্‌রা বেঁচে ছিল দীর্ঘকাল। ইরেক্টাস আফ্রিকার বাইরে প্রসারিত প্রথম হোমিনিন প্রজাতি ছিল, এমনকি নিয়ান্ডারথালদের আগেও। কিন্তু তার মস্তিষ্ক বেশ ছোট ছিল। কিছু নৃ-তত্ত্ববিদের মতে, এটি ছিল অস্বস্তিকর ও বিলুপ্তির কারণ। কিন্তু নিয়ান্ডারথালদের শরীরের আকারের তুলনায় সমান বড় মস্তিষ্ক থাকলেও আধুনিক মানুষের হাতে তাদের আফ্রিকার বাসস্থান দখল হয়ে যায়।

অন্যদিকে আধুনিক মানুষের দ্রুত নতুনত্ব ও ভালো পরিবেশ তৈরির দক্ষতা ও সেগুলোকে কাজে লাগানো এবং একটি উচ্চ প্রজননগত সাফল্য তাদেরকে নেতৃত্বের আসনে বসিয়েছে। আমাদের বড় মস্তিষ্কও আমাদের সাফল্যের ক্ষেত্রে একটি ভূমিকা পালন করেছে।

নৃ-বিজ্ঞানী কোনার্ড ও পাবলিন বিশ্বাস করেন, এসব ছাড়াও স্বকীয়তা আমাদের এতো দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করেছে। হাজার হাজার বছর আগে আমাদের উন্নতমানের এই ক্ষমতা অন্যান্য হোমিনিনদেরও মোটামুটি ছিল। তাই অন্য কোনো প্রজাতিও আমাদের জায়গা দখল করতে পারতো। কিন্তু তারা তা করেনি এবং শেষ পর্যন্ত আমরা তাদের খুঁজে প্রতিযোগিতায় টিকে থেকেছি। আমাদের জনসংখ্যা বিস্ফোরিত হয়েছে, অন্যান্য প্রজাতি পশ্চাত্পদ এবং অবশেষে পুরাপুরি অদৃশ্য হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
এএসআর


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান