ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন ৮ আগস্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ২১:০৬, আগস্ট ৭, ২০১১

ঢাকা: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছার জন্মদিন ৮ আগস্ট। ১৯৩০ সালের এ দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির জনকের সঙ্গে তাকেও হত্যা করা হয়।

বেগম মুজিবের জন্মদিন যথাযোগ্যভাবে উদযাপনের জন্যে আওয়ামী লীগ সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

বঙ্গমাতা পরিষদের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১১টায় রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন) গ্রান্ড বলরুমে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল¬ুর রহমান।

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসবক লীগ শহীদ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা আয়োজন করেছে।

বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ শহীদ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

এছাড়াও এ মহীয়সী নারীর জন্মদিবস পালন উপলক্ষে শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


বেগম মুজিব জীবদ্দশায় বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি পদক্ষেপে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। ছায়ার মতো অনুসরণ করেছেন স্বামীর আদর্শ। জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন। এজন্য অনেক কষ্ট, দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে।

শহীদ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাত্র তিন বছর বয়সে পিতা ও পাঁচ বছর বয়সে মাতাকে হারান। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে প্রাথমিক লেখাপড়া করেন তিনি।

এরপর সামাজিক রীতি-নীতির কারণে গ্রামে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে শেখ বাড়িতে পরিবারের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষাদানের জন্য মৌলভী এবং বাংলা, ইংরেজি ও অংক শিক্ষার জন্য গৃহশিক্ষক রাখার রেওয়াজ ছিল। পরিবারের সকল শিশু-কিশোর বিশেষ করে মেয়েরা বাড়িতেই শিক্ষা গ্রহণ করতো।

স্বামীর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করেছেন তিনি।

রাজনৈতিক জীবনের অনেক জটিল সংকট পরিস্থিতিতে স্বামীর পাশে থেকে সৎ পরামর্শ দিতেন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করতেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করতেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করার পর তদানিন্তন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়। কিন্তু তাকে দমেননি বেগম মুজিব।

তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন। কারাগারে আটক নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নিতেন। পরিবার-পরিজনদের যে কোন সংকটে পাশে দাঁড়াতেন।

বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালে তার মামলা পরিচালনার ব্যবস্থা করা, দলকে সংগঠিত করতে সহায়তা করা, আন্দোলন পরিচালনায় পরামর্শ দেওয়াসহ প্রতিটি কাজে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

আন্দোলন চলাকালে প্রতিটি ঘটনা জেলখানায় সাক্ষাৎকারের সময় বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ নিয়ে আসতেন। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে সে নির্দেশ জানাতেন। নেপথ্যে থেকে তিনি ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।

তিনি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন।

১৯৭১-এর ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার পর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হানাদার বাহিনীর চোখ এড়িয়ে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ জামাল, শেখ রাসেলসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অবরুদ্ধ ঢাকা শহরে আত্মগোপন করেন।

পরে পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দারা তাদের মগবাজারের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। অতঃপর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে পরিবারের অন্য সদস্যসহ ধানম-ির ১৮ নং সড়কের একটি বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় এবং পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর ১৯৭১-এর ১৭ ডিসেম্বর তাদের বন্দিদশার অবসান ঘটে।

এই মহীয়সী নারী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে দেশ ও জাতির সেবা করে গেছেন। জনগণের জন্য সমগ্র জীবন তিনি অকাতরে দুঃখবরণ করেছেন এবং সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১১


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান