
ঢাকা: দি মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড তাদের নামের সাথে ‘ব্যাংক’ শব্দ যাতে ব্যবহার না করতে পারে, সেই সঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বয় সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. মো. খায়রুল হোসেন ও আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ, যৌথ মুলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয়, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, সমবায় অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম না করার জন্য জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যাংক নয়, অথচ নামের শেষে ব্যাংক শব্দটি থাকায় অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করারও অভিযোগ রয়েছে। কয়েকদিন চিঠি দিয়ে ব্যাংক শব্দটি ব্যবহার না করারও নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়াও দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা অনেক দিন ধরেই সংকটাপন্ন। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর একক সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারকে বিপাকে ফেলেছে। আর্থিক খাতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সমন্বয়হীনতার কারণে তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের লাইসেন্স বাতিল ও তিতাস গ্যাস কোম্পানির মুনাফা বণ্টন নীতির পরিবর্তন পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গুরুত্বপুর্ণ এ দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয় না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অন্য নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলো।
এসব বিষয়ে সংস্থাগুলোর সমন্বয় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক।
সভা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের লাইসেন্স বাতিল করে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ার আছে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৭২ হাজার ১৫৭টি। যার মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা না করে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয় সভায় প্রশ্ন তোলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর প্রতিবাদ করে বৈঠকে উপস্থিত আইডিআরএর প্রতিনিধি দল।
এ নিয়ে পরস্পরের দোষারোপ করে আইডিআরএ ও বিএসইসি। তবে ভবিষ্যতে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোন কোম্পানির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানি তিতাস গ্যাস লিমিটেডের মুনাফা সরকারি ফান্ডে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আগে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেলেও এখন পাচ্ছে সরকার। এতে তিতাসের শেয়ারমুল্য অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে বিসএইসির সঙ্গে কোন আলোচনা করা হয়নি।
সভায় বলা হয়, তিতাস গ্যাসের বাজারে ছাড়া শেয়ারগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ বিদেশিরা কিনেছেন। হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন বিদেশিদের হতাশ করেছে। অন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিরা নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে পারে। এজন্য আগামী সভায় বিইআরসিকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৬
এসই/আরআই