
ঢাকা: নতুন জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী আট মাসের বকেয়া পেতে যাচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এপ্রিল মাসের বেতনের সঙ্গে গত বছরের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেতন ছাড় দিয়ে বৃহস্পতিবার (৫ মে) এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, সরকারি এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এপ্রিল মাসের বেতনের সঙ্গে আট মাসের বকেয়া পাবেন।
মন্ত্রণালয় জানায়, প্রায় পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এপ্রিল মাসের বেতনের সরকারি অংশ হিসেবে ৯৪০ কোটি ৪৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও আট মাসের বকেয়া হিসেবে দুই হাজার ৬৬১ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসমূহের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তারা এ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোর (পে-স্কেল) গেজেট প্রকাশ করে সরকার। তবে শিক্ষকদের বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি চাকরিজীবীদের মতো সুবিধাপ্রাপ্তির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। এর বাইরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরাও এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন।
তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ২০ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে জানায়, গত বছরের ১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের নতুন বেতন স্কেল কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২৮ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় শিক্ষক-কর্মচারীদের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের বকেয়া দুই হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ছাড় দেয়। ওই সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, মার্চের বেতনের সঙ্গে ওই বকেয়া অর্থ পাবেন তারা। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য সংগ্রহের কারণে কালক্ষেপণ হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা এতো দিন পেয়ে আসছিলেন আট হাজার টাকা। দশম গ্রেডে তা হবে ১৬ হাজার টাকা। নবম গ্রেডে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ২২ হাজার টাকা, এতোদিন যা ছিল ১১ হাজার টাকা।
আর এমপিওভুক্ত কলেজের প্রভাষকের মূল বেতন নবম গ্রেডে হবে ২২ হাজার টাকা, এতো দিন যা ছিল ১১ হাজার টাকা। সহকারী অধ্যাপকদের বেতন ষষ্ঠ গ্রেডে সাড়ে ৩৫ হাজার টাকা, এতোদিন যা ছিল ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। আর অধ্যক্ষদের বেতন হবে ৫০ হাজার টাকা, এতোদিন তারা পেয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫০ টাকা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, বেসরকারি শিক্ষকরা মূল বেতনের শতভাগ সরকারি তহবিল থেকে পেয়ে থাকেন। তাদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রতি মাসে লাগতো প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
শিক্ষক-কর্মচারীদের এতো বৃহৎ অঙ্কের থোক বরাদ্দ এই প্রথম ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৬/আপডেট ১৮১১ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এএটি/কেআরএম