
ছবি: উজ্জ্বল ধর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
চট্টগ্রাম: কঠোর পুলিশি প্রহরায় রাউজানের গহিরায় গ্রামের বাড়িতে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তবে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন না তার দুই সহোদর বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামালউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
এ নিয়ে উপস্থিত মানুষদের মধ্যে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে, এ নিয়ে নানা কানাঘুষাও করছেন অনেকে।
রোববার (২২ নভেম্বর) সকালে পৌর এলাকার মধ্য গহিরায় গ্রামের বাড়ি ‘বাইতুল বিল্লালে’র উঠানে জানাজায় ইমামতি করেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
এ সময় সাকার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ স্বজনরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না তার আপন দুই ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামাল উদ্দিন কাদের চৌধুরী।
জানাজায় অংশ নেননি সাকার চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীও।
তবে তার ছেলে এবিএম ফয়েজ কাদের চৌধুরী ছিলেন সেখানে।
যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, ‘যাইনি, তবে বিকেলে গায়েবানা জানাজা আছে, সেখানে অংশ নেবো।’
স্থানীয়রা জানান, সাকা চৌধুরীরা চার ভাই ছিলেন। এরমধ্যে সাকাই সবার বড়। তার একভাই সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরী গত এপ্রিলে মারা গেছেন।
গিয়াস কাদের বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও জামাল কাদের রাজনীতি করেন না। গিয়াস বর্তমানে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে মূল পারিবারিক কবরস্থানে জায়গা না থাকায় নতুন কবরস্থানে সাকা চৌধুরীকে দাফন করা হয়।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে কঠোর প্রহরায় মরদেহ সরাসরি বাড়ির উঠানে জানাজাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু তার ছেলে হুম্মাম ও স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী তাকে ফের গোসল করাতে চান। যদিও পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা আর হয়নি।
এর আগে সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে প্রবেশ করে সাকা চৌধুরীর মরদেহবাহী গাড়ি।
এরপর তা বারৈয়ারহাট, বড়দারোগার হাট, সীতাকুণ্ড বাজার, কুমিরা ভাটিয়ারী হয়ে বিএমএ সংলগ্ন সড়কে হাটহাজারী হয়ে গহিরায় পৌঁছায়।
সাকার দাফনকে কেন্দ্র করে রাউজানের গহিরা ও আশপাশের এলাকায় শনিবার রাতে ১০ প্লাটুন পুলিশ ও দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
রোববার সকালে আরও ১০ প্লাটুন পুলিশ ও দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির দণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল করেন সাকা। তবে সর্বোচ্চ সাজার প্রেক্ষিতে আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১৮ নভেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
শনিবার রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান সাকা। কিন্তু ক্ষমা পাননি তিনি। যদিও কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করে ছেলে হুম্মাম বলেছেন, তার বাবা প্রাণভিক্ষা চাননি।
এদিকে সাকা ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে আরেকটি দায়মুক্তির ইতিহাস রচিত হলো। তার আগে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও চলতি বছরের ১১ এপ্রিল কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
আরডিজি/এমইউ/এমএ/