২ শিষ্যের জবানিতে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৭:৪৯, নভেম্বর ৩, ২০১৫
ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঘাতকের গুলিতে নিহত জাতীয় চার নেতার অন্যতম দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন আত্মত্যাগ ও আপসহীন রাজনৈতিক আদর্শের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অভিন্ন এ মন্তব্য করেছেন তার দুই রাজনৈতিক শিষ্য ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান ও ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা।

প্রবীণ এ দুই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহের গর্ব ক্ষণজন্মা এ রাজনীতিকের অবদান ও আত্নত্যাগ অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তিনি সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার এ অবদানের কথা জাতি চিরকাল মনে রাখবে।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তারা এসব কথা বলেন। এ সময় প্রবীণ এ দুই নেতা স্মৃতিকাতর হয়ে উঠেন। অদৃশ্য সেলুলয়েডে তারা দেখেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এ সহচরকে। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, কাপুরুষ ঘাতচক্রের হাতে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তিনি আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন আপোসহীন।

স্মৃতিচারণ করে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান বলেন, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। স্বাধীনতার পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্যার আমাকে বললেন, তুমি কোন দেশের রাষ্ট্রদূত হতে চাও বলো, আমি বানিয়ে দেবো। আমি বললাম, আমাদের মিন্টু কলেজের একটু জায়গার ব্যবস্থা করে দিন। পরে তিনি জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরামর্শ ছাড়া কোনো কাজ করতেন না জানিয়ে ধর্মমন্ত্রী বলেন, মরহুম রফিক উদ্দিন ভূইয়া ও আমি সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্যারের খুব ভক্ত ছিলাম। তার পরামর্শ ছাড়া কোনো কাজ করতাম না। তার স্ত্রী নাফিসা ইসলামও আমাকে অনেক স্নেহ করতেন।

দেশের জন্য জাতীয় চার নেতার আত্বত্যাগ আপসহীন রাজনৈতিক আদর্শের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলেও মন্তব্য করেন প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান।

সৈয়দ নজরুল ইসলামের প্রিয় ছাত্র, রাজনৈতিক শিষ্য ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা।

প্রবীণ এ নেতা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৫৩ সালে আমি যখন আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের ছাত্র, তখন স্যার আমাদের ইতিহাসের ক্লাস নিতেন। তিনি যখন পড়াতেন তখন আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতাম। ওকালতি করার সময় প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে স্যারের চেম্বারে যেতাম। তার অধীনে কাজ শিখতাম। খেলাধুলা, নাটকে খুব উৎসাহী ছিলেন তিনি। কলেজের যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনিই ছিলেন প্রাণপুরুষ।

‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানের সঙ্গে সঙ্গে আমরা শ্লোগান দিতাম ‘বাংলার বুলবুল, সৈয়দ নজরুল’, এ কথা বলেই আবেগাত হয়ে পড়েন প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতা।

খোকা বলতে থাকেন, ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবনে তিনি (সৈয়দ নজরুল ইসলাম) ছিলেন সততার মূর্ত প্রতীক। এ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তিনিই উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুও তাকে সম্মান করতেন। ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে, তখন এ আন্দোলন বেগবান করতে সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন। আমাদের মনের মনিকোঠায় তিনি চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৫
আরএম

** সৈয়দ নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত সেই বাড়ি


সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান