ভোটের খাতায় আ’লীগই এগিয়ে

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০৩:১৪, জুলাই ১, ২০১৪

ঢাকা: গত আড়াই দশকের ভোটের রাজনীতিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত চারটি সাধারণ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক দলটির ভোট ক্রমান্বয়ে বেড়েছে।

পক্ষান্তরে বিএনপির ভোট কখনো বেড়েছে, কখনো কমেছে। আর জামায়াতের ভোট ধারাবাহিকভাবে কমেছে।

তত্ত্বাবধায়কের অধীনে অনুষ্ঠিত ওই ৪ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গড়ে ৩৮.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আসন পেয়েছে গড়ে ১৩১টি করে। বিএনপি গড়ে ভোট পেয়েছে ৩৪.৪৭ শতাংশ। আসন পেয়েছে গড়ে ১২০টি করে। জামায়াত গড়ে ভোট পেয়েছে ৭.৪৩ শতাংশ। আসন পেয়েছে গড়ে ১০টি করে।

নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে কাস্ট হওয়া ভোটের ৩০.০৮ শতাংশ পায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ওই বছর তারা ৮৮টি আসন নিয়ে বিরোধী দল গঠন করে।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলটির ভোট ৭ শতাংশ বেড়ে ৩৭.৪৪ শতাংশে দাঁড়ায়। ওই বছর ১৪৬ আসন নিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

এর পর ২০০১ সালের নির্বাচনে আসন প্রাপ্তির দিক থেকে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হলেও দলটির ভোট ৩ শতাংশ বেড়ে ৪০.১৩ শতাংশে দাঁড়ায়। যদিও মাত্র ৬২ আসন নিয়ে বিরোধী দল গঠন করে তারা।

এর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট আরও প্রায় ৮ শতাংশ বেড়ে ৪৮.০৪ শতাংশে দাঁড়ায়। এবার তারা ২৩০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করে।

অর্থাৎ ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৪টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট কখনো কমেনি। ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।


                          


অন্যদিকে ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে কাস্ট হওয়া ভোটের ৩০.৮১ শতাংশ পায় বিএনপি। ওই বছর তারা ১৪০টি আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলটির ভোট ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৩.৬০ শতাংশে দাঁড়ায়। ওই বছর ১১৬ আসন নিয়ে বিরোধী দল হয় তারা।

এর পর ২০০১ সালের নির্বাচনে ৭ শতাংশ বেড়ে ৪০. ৯৭ শতাংশে দাঁড়ায় বিএনপির ভোট। সে বছর তারা ১৯৩ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।

কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রাপ্ত ভোট ৮ শতাংশ কমে ৩২.৫০ শতাংশে দাঁড়ায়। এ দফায় তারা মাত্র ৩০ আসন পেলেও বিরোধী দল হয়।

অর্থাৎ ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৪ টি নির্বাচনে বিএনপির ভোট কখনো বেড়েছে কখনো কমেছে। 

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলের  ছত্রছায়ায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করা স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত গত আড়াই দশকের ভোটের রাজনীতিতে ধারাবাহিকভাবে পিছিয়েছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে কাস্ট হওয়া মোট ভোটের ১২.১৩ শতাংশ পায় তারা। আসন পায় ১৮টি।

এর পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিতর্কিত এই রাজনৈতিক দলটির ভোট ৪ শতাংশ কমে ৮.৬১ শতাংশে দাঁড়ায়। সেবার তারা আসন পায় মাত্র ৩টি।

২০০১ সালের নির্বাচনে আরও ৪ শতাংশ কমে তাদের ভোট দাঁড়ায় ৪.২৮ শতাংশে। ভোট কম পেলেও জোটের কল্যাণে সে বছর তারা ১৭টি আসনে বিজয়ী হয়।

এর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে কাস্ট হওয়া মোট ভোটের ৪.৭০ শতাংশ পেলেও আসন পায় মাত্র ২টি। অর্থাৎ স্বাধীনতা বিরোধী এই দলটির ব্যাপারে দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহের পারদ কখনো কখনো ঊর্ধ্বমুখী হলেও ভোটাদের আগ্রহের পারদ ছিল নিম্নমুখী।

প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ভোটপ্রাপ্তির এমন পরিসংখ্যান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জন আকাঙ্খার প্রতিফলন কিছুটা হলেও ঘটেছে। তাই ওই সময়ে অনুষ্ঠিত ৪টি নির্বাচনে তাদের ভোটের হার বেরেছে। কিন্তু ২০০৮ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভোটারবিহীন নির্বাচনের এগিয়েছে তারা। এটা গণতন্ত্র  ও আওয়ামী লীগ উভয়ের জন্যই ক্ষতি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৪


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান