শাহজালাল বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে যাত্রী হয়রানি

জাহাঙ্গীর সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০৭:২০, অক্টোবর ২০, ২০১৩

ঢাকা: ‘পাসপোর্ট কই, ফরম পূরণ করছিস, দেখি’ বলে আবারও ধমক- ‘এতো ঘষা-মাজা কেন, এটা হবে না আবারও লিখে নিয়ে আয়’। লিখে আনার পর আবারও তুই-তুকারি করে ইমিগ্রেশন অফিসার জোরে ধমক দিয়ে বললেন, ‘সিল দিয়ে দিছি, এবার সামনে গিয়ে বস। যখন মাইকে ডাকবে তখন বিমানে উঠিস’।

হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগ থেকে এমনই ব্যবহার করা হয়েছে আসমা বেগমের(৩২) সঙ্গে। আসমা বেগমের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ায়।  
 
ওমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ছয় বছর ধরে কাজ করে আসছেন আসমা। দুই বছরে একবার ছুটি পান তিন মাসের জন্য। আর তাই আত্বীয় স্বজনদের সাথে ছুটি কাটাতে দেশে আসেন তিনি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গত শুক্রবার ওমানে যান তিনি। এ বিমানবন্দর দিয়ে আসার সময়ও তাকে ইমিগ্রেশনের অফিসারদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছিলো।
 
অভিযোগ করে আসমা বাংলানিউজকে বলেন, ওমানে যাওয়া-আসার সুবাদে কয়েকটি দেশের বিমানবন্দর তিনি ব্যবহার করেছেন। সেসব বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সম্মান জানিয়ে কথা বলেন, কোনো সমস্যা আছে কি না জিজ্ঞাসা করেন। আর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা তুই-তুকারি করেন।
 
তিনি আরো বলেন, হাড় ভাঙ্গা খাটুনি করে আমরা বিদেশে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করি। আর আমাদের সঙ্গেই তারা এরকম দুর্ব্যবহার করেন।

শুধু আসমাই নন, দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে তারা চরম দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
 
গত ৩ অক্টোবর দেশের একজন সিনিয়র সাংবাদিক থাই এয়ারওয়েজের বিমানে থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন ফর্ম বাংলায় পূরণ করায় ইমিগ্রেশন ডেক্সের এসআই রাসেদ নামের এক কর্মকর্তা কটাক্ষ করে বাংলা ভাষা নিয়ে ব্যঙ্গ করেন।
 
২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ছয়টায় এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে তিন সাংবাদিক ভারতের রাজধানী দিল্লিতে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে যোগ দিতে যাওয়ার সময়ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের চরম দুর্ব্যবহারের শিকার হন।
এ রকম দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন দেশে যাওয়া যাত্রীরা। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা যাত্রীদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুবাইগামী একজন বিমানযাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, বিমানে যারা ভ্রমণ করেন, তারা নিশ্চয়ই কেউ নিম্নশ্রেণীর মানুষ নন। আর যারা বিমানবন্দর ব্যবহার করেন তারা সংশ্লিষ্ট বিমান কোম্পানিকে টার্মিনাল ব্যবহারের জন্য কর দেন। কর দেওয়া যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করাটা দু:খজনক।
 
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের পুলিশ সুপার নাফিউল আলম বাংলানিউজকে জানান, দুর্ব্যবহারের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
 
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগে আগমনী ও বহির্গমন মিলে ৮৮টি কাউন্টার রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সেখানে তিনটি শিফটে কাজ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। প্রতি শিফটে ৬৫ জন করে এসআই (উপ-পরিদর্শক) ও ১৫ জন করে এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) দায়িত্ব পালন করেন। তাদের তত্ত্বাবাধনের জন্য একজন এএসপি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২১০৩
জেএস/এএসআর/আরআইএস/এনএস


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান