
ঢাকা: পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের জামিন বাতিল করে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদের সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলার শুনানিতে জামিন বাতিল হওয়ার পর এজলাস থেকে পালিয়ে গেছেন সাবেক এই সামরিক শাসক।
দেশটির সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, জামিন বাতিলের পর গ্রেফতার এড়াতে নিরাপত্তারক্ষীদের সহায়তায় দ্রুত এজলাসকক্ষ ত্যাগ করেন মোশাররফ।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করার পর ২০০৭ সালে দেশটির বিচারকদের অপসারণ করায় তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, মামলার শুনানির সময় এজলাসকক্ষে স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন মোশাররফ। কিন্তু তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে আদালতে উপস্থিত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল মোশাররফের দেশ ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সাবেক সামরিক শাসক যাতে পাকিস্তান ত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশ দেন আদালত।
সংবিধান লঙ্ঘন করে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করার জন্য আদালতে দায়ের করা কয়েকটি মামলার প্রাথমিক শুনানিতে সেদিন এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।
আদালতে মোশাররফের বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপনকালে আইনজীবীরা বলেন, “সাবেক স্বৈরশাসক ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তার বিচার হওয়া উচিত।”
আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, “সাবেক সামরিক শাসকের এমন শাস্তি হওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে কেউ সংবিধান লঙ্ঘন করার সাহস না করে।” এছাড়া, মোশাররফের সহযোগীদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে আদালতকে অনুরোধ জানান আইনজীবীরা।
গ্রেফতার ও তালেবানদের হত্যার হুমকি মাথায় নিয়েই আগামী ১১ মে’র জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গত ২৪ মার্চ ৪ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফিরেন সাবেক এই সেনা প্রধান।
কিন্তু নির্বাচন থেকেও ছিটকে পড়েন তিনি। সম্প্রতি ৪টি সংসদীয় আসনে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচনী আদালত।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম জানায়, মোশাররফ যে চারটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তা বাতিল করে দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, মোশাররফ করাচি, কসুর, চিত্রাল ও ইসলামাবাদের চারটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মোশাররফ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচনী আদালতে আপিল করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টেও বিচারপতিদের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দেন।
ট্রাইব্যুনাল জানায়, মোশাররফ সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সুতরাং আগামী নির্বাচনে তিনি লড়তে পারবেন না।
বিচারকদের অপসারণ ছাড়াও মোশাররফের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও একজন বেলুচ নেতা হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ১১৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৩
সম্পাদনা : হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর[email protected]