
ঢাকা: প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলুর মাঝে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খোন্দকার দেলোয়ারের রাজনৈতিক প্রতিচ্ছবি খুঁজছেন বলে জানিয়েছে বিএনপির একটি বিশ্বস্ত সূত্র।
দেলোয়ারের সম্ভাবনা খালেদা জিয়া বাবলুর মাঝে দেখতে পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাবলুর মাঝে তিনি দেখছেন খন্দকার দেলোয়ারের ছাপ। আর তাই বাবলুকে দিয়েই দেলোয়ারের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক দক্ষতার পূনরাবৃত্তি পেতে চান খালেদা।
সম্প্রতি বাবলুকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে নামার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও খোদ খালেদা জিয়া নিজেই দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি’র এক নেতা জানান, বিদেশ থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাকে রাজনীতিতে আন্তরিকভাবে কাজ শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবলু খোন্দকার দেলোয়ারের মতোই ‘ঝানু’ রাজনীতিকে হবেন বলে খালেদা জিয়ার আশাবাদের কথাও জানান ওই নেতা।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, “ম্যাডাম(খালেদা জিয়া)আমাকে কাজে নামতে বলেছেন। আর আমার নিজেরও এ বিষয়ে আগ্রহ ছিলো। এবার ম্যাডামের নির্দেশনা পেয়ে তাই আরো বেশি তাগিদ অনুভব করছি।’’
তবে এটাকে এক ধরনের ‘পজিটিভ চাপ’ বলে মনে করেন তিনি। বাবলু বলেন, ‘‘এটা এক ধরণের চাপ। কেউ যখন খুব ভালো কিছু আশা করে তখন সেটা একটা প্রেশার হয়ে দাঁড়ায়। তবে আশা করি, ম্যাডামের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবো।’’
বাবা খোন্দকার দেলোয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাবা অনেক দক্ষ রাজনীতিক ছিলেন। অনেকেই আমার মাঝে বাবার ছাপ দেখতে পান বলেও আমাকে জানান। তবে রাজনীতিতে তার পর্যায়ে যাওয়া সহজ ব্যাপার নয়।’’
খোন্দকার দেলোয়ারও বেঁচে থাকতে তার এই ছেলেকে রাজনীতিতে দেখতে চেয়েছেন বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন দেলোয়ার পত্নী সাহেরা হোসেন।
তিনি জানান, তার স্বামী এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে বলে গেছেন বাবলুকে। বাবার মতো রাজনীতি করবে বাবলু- এটাই চাইতেন তিনি। প্রায়ই বাবা-ছেলের মধ্যে রাজনীতি নিয়ে ‘কথাবার্তা’ হতো বলেও জানান সাহেরা।
দলের প্রধান খালেদা জিয়া ও বাবা খোন্দকার দেলোয়ারের ইচ্ছা ও নিজের আগ্রহের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বাবলু রাজনীতিতে ক্রমশ সক্রিয় হচ্ছেন বলে তিনি জানালেন বাংলানিউজকে।
এ প্রসঙ্গে বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, “ এলাকায় আগে থেকেই যাই। এখন আরো বেশি সময় ব্যয় করছি। এলাকাবাসীর সঙ্গে সময় পেলেই বসছি। তাদের কথা শুনছি।”
প্রয়োজনীয় অনেক পরামর্শ তাদের কাছ থেকে পাচ্ছেন বলেও জানান বাবলু।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেফতার হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে তৎকালীন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্বভার অর্পণ করে কারাগারে চলে যান খালেদা জিয়া।
এরপর থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সবচেয়ে ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ সময়ে দলের হাল শক্ত করে ধরেন খন্দকার দেলোয়ার।
স্ত্রী সাহেরা হোসেন, ছেলে ড. খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, অ্যাডভোকেট খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু, খোন্দকার আখতার হামিদ পবন, মেয়ে ডা. দেলোয়ারা বেগম পান্না ও ডা. লুনা খন্দকারকে নিয়ে ছিল প্রয়াত এই মহাসচিবের পরিবার।
২০১১ সালের ১৫ মার্চ অসুস্থ অবস্থায় সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮ , ২০১৩
এসকেএস/সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর