ঢাকা: সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ভিয়েতনামের বর্তমান রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে তদন্তে অগ্রগতি নেই।
মামলার চার্জশিট একবছরেও হয়নি । চার্জশিট দেয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে রোববার দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে একাধিক গণমাধ্যমে তিন চারদিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বাংলানিউজকে বলেন, “নিয়মানুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিট গঠনের জন্য কমিশনের কাছে অনুমোদন চাইবেন। এরপর কমিশন যাচাই-বাছাই করে চার্জশিট দেওয়া প্রয়োজন মনে করলে চার্জশিট দেবে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
২০১১ সালের নভেম্বর মাসে দুদকের সহকারি পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বাদী হয়ে সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে রমনা থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন। দুদক সূত্রে জানা যায়, মামলার পর দীর্ঘ অনুসন্ধানে সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
চার্জশিটের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এর তদন্ত কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, অনুসন্ধানের পর বিষয়টি তদন্তের অধীনে রয়েছে। চার্জশিটের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মামলার বিবরণ এবং অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, ভিয়েতনামে যাওয়ার আগে তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘মিনিস্টার’ হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় এ রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার সুপ্রদীপ চাকমা (বর্তমানে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত) এবং তুরস্ক দূতাবাসের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান উভয়ের যোগসাজশেই তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৭ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার (১২ লাখ ৩০৬ টাকা), কল্যাণ তহবিলের পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার (তিন লাখ ১৮ হাজার ৯২৫ টাকা), তিন হাজার ৭৬৪ দশমিক ৩৯ তুর্কি লিরাসহ (দুই লাখ পাঁচ হাজার ২৩৫ টাকা) মোট ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭৬ টাকা আত্মসাৎ করেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিল ভাউচার দেখাতে পারেননি সুপ্রদীপ চাকমা। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা ছাড়াও সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করে দুদক। গাড়ি আনার কথা উল্লেখ করে তিনি দুই লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে সুপ্রদীপ চাকমাকে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০০৭ সালে এ কূটনৈতিককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বর্তমানে তিনি ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বরত।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১২
এডিএ/সম্পাদনা: হাসান শাহরিয়ার হৃদয়, নিউজরুম এডিটর, সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর