একমঞ্চে দুই মেরুর দুই নেতা কাজী জাফর ও নোমান

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ০৪:৫৪, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১২

ময়মনসিংহ: কাজী জাফর আহমদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান। দুই মেরুর দুই নেতা। একজন জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। অন্যজন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী।

এখন দু’জনের দল, মত ও পথ ভিন্ন হলেও দু’জনই ছিলেন মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সহচর। তাদের রাজনৈতিক উত্থানের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ভাসানীর নাম।

দু’জনেই ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শীর্ষ সারির নেতা ছিলেন। তাই ভাসানী অনুসারীদের ডাকে সাড়া না দিয়ে তারা পারেননি।

শনিবার বিকেলে কাজী জাফর আহমদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান এসেছিলেন মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিঘেরা শহর ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহ জেলা ভাসানী অনুসারী পরিষদের আত্মপ্রকাশ ও ‘মাওলানা ভাসানীর চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দুই নেতা ছিলেন যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও প্রধান বক্তা।

মাওলানা ভাসানী ইস্যুতে এ দু’জন বসেছিলেন একমঞ্চে। নিজেদের বক্তব্যে তারা বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন তাদের রাজনৈতিক গুরুর কথা। পাশাপাশি দু’মেরুর এ দু’নেতা একে অপরকে রাজনৈতিক জীবনের সহযাত্রী হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

তবে ভাসানীর চেতনায় প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের যে আন্দোলনে তারা একাট্টা হয়েছেন সেখানে তাদের দু’জনেরই বর্তমান দলের ঐক্য সম্ভব কি না সেটা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

তবে তারা এ ঐক্যের বিষয়ে কোনো বক্তব্য না দিলেও একমত হয়ে বলেছেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ কোনো রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। এটা একটি সামাজিক শক্তি বা আন্দোলন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, সামাজিক শক্তি যতো বেশি শক্তিশালী হবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জবাবদিহিতা ততোই বাড়বে। ভাসানীর আদর্শকে সামনে রেখে এ সংগঠন এগিয়ে যাবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা কাজী জাফর আহমদ বলেন, ভাসানী অনুসারীদের যাত্রাপথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। কিন্তু ভাসানীর অনুসারীরা একদিন সফল হবেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদ সামাজিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে পারলে এ সংগঠন হবে দেশের রাজনীতিতে একটি চালিকাশক্তি।

কাজী জাফর আহমদ বলেন, ‘মাটির সোদা গন্ধ দেখেই মাওলানা ভাসানী বুঝতেন, দেশের মানুষ কি চান। তিনি দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য রাজনীতি করতেন।

কাজী জাফর আহমদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানান।

কৃতজ্ঞতাচিত্তে দু’জনই অভিন্ন সুরে বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১’র মুক্তি সংগ্রাম পর্যন্ত মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন অগ্রভাগে।

কাজী জাফর আহমেদ বলেন, আপোষের চোরাবালিতে যখন মুক্তিযুদ্ধ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল তখন ভাসানীর অনড় অবস্থানের কারণেই এ দেশ স্বাধীন হয়েছে।

‘১৯৫৭ সালের কাগমারি সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ভাসানীর ভাবশিষ্য শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, পূর্ব বাংলার জনগণ একদিন পশ্চিম পাকিস্তানকে আসসালামুলালাইকুম বলতে বাধ্য হবে’ যোগ করেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।  

ভাসানীকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি
 
সভায় মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান ময়মনসিংহ জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদ।

পাশাপাশি তিনি ময়মনসিংহ শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ ও ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী যে কোনো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাসানীর নামে নামকরণ, আনন্দমোহন কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করার দাবি জানান।

তার এ বক্তব্যে সমর্থন জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও প্রধান বক্তা কাজী জাফর আহমদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান।

আ.লীগ ভাসানীর জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করে না: কাজী জাফর

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১২
আব্দুল্লাহ আল মামুন খান/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান