
ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শাফায়াত জামিল বীর বিক্রম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি... রাজিউন)। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাড়িতে হার্ট অ্যাটাকে জীবনাবসান হয় এই বীর সেনানীর। তার পরিবার এ কথা জানিয়েছে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ নেতৃত্ব আর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য শাফায়াত জামিল বীর বিক্রম খেতাব পান। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
শনিবার জোহরের নামাজের পর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জানাজায় স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন শরিক হন। এছাড়া সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারাও জানাজায় শরিক হন।
শাফায়াত জামিলকে সমাহিত করা হয়েছে বনানীর সেনাবাহিনী কবরস্থানে। সেখানে দাফনের পর সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর প্রথা অনুযায়ী জাতীয় পতাকা ও সেনাবাহিনীর পতাকা প্রয়াতের ছেলে শাহরিয়ারের হাতে তুলে দেন সেনাপ্রধান।
জানাজা ও দাফনের সময় দেশের প্রথম সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক খানও ছিলেন। সেনাবাহিনীতে শাফায়াত জামিলের সহকর্মীরাও ছিলেন সেখানে।
শাফায়াত জামিলের জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার খড়গমারা গ্রামে। তার বাবা এ এইচ করিমুল্লাহ। তিনি পূর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই নম্বর সেক্টরের অধীন আশুগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া-গঙ্গাসাগর এলাকায় লড়াই করেন শাফায়াত জামিল। একসময় তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক করা হয় তাকে।
সিলেটের ছাতকে তার নেতৃত্বে যুদ্ধ হয়। ১৯৭১ সালের ১১ অক্টোবর পরিচালিত এই যুদ্ধে শাফায়াতের অধীন তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ৩৬৪ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর টালমাটাল পরিস্থিতিতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানে তিনি ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকে সহায়তা করেন এবং খন্দকার মোশতাক আহমদের শাসনের বিরুদ্ধে বঙ্গভবনের দিকে অগ্রসর হন। ৭ নভেম্বর তাঁর সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। খালেদ মোশাররফ নিহত হন ও কর্নেল জামিল গ্রেফতার হন।পরে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১২
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর [email protected]