
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উপলক্ষে উৎসবমুখর আয়োজনে চলছে পুরান ঢাকায়। পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতি বছর পৌষের শেষ দিনে উৎসবটি পালন করে পুরান ঢাকাবাসী। ১৪ জানুয়ারি দিনভর ঘুড়ি ওড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় আতশবাজি ও রংবেরঙের ফানুসে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী শহরের আকাশ।
সাকরাইন উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, নয়াবাজার, তাঁতীবাজার, গেণ্ডারিয়া, ধূপখোলা ও সুত্রাপুর এলাকায় ঘুড়ি, নাটাই ও সুতা বেচাকেনার ধুম পড়েছে। অন্যান্যবারের মতো এবারও চলছে বেচাকেনার উৎসব।
শাঁখারিবাজারের ঘুড়ি বিক্রেতা সোমেন জানান, গত বছরের তুলনায় এবারের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। আশেপাশের অনেকে চাহিদা অনুযায়ী ঘুড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
ঘুড়ি কিনতে এসে পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা হাজী জাফর শেখ বলেন, বাড়ির ছাদে পারিবারিকভাবে সবাই সাকরাইন উৎসব করব। ছোট বড় মিলিয়ে ৫০টা ঘুড়ি কিনেছি।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, সাকরাইনের মূল আনন্দ হলো ঘুড়ি ওড়ানো। সুতা দিয়ে অন্যের ঘুড়ি কেটে ফেলার মধ্যেই আসল মজা। যৌবনে আমরা বেশি মজা করেছি। এখন নাতিরা করে। নাতিকে ৩০টা ঘুড়ি কিনে দিয়েছি। এখনও শৈশবের সোনালি ছবি দেখতে পাই।
দিনব্যাপী ঘুড়ি ওড়ানো শেষে পুরান ঢাকার অলিতে-গলিতে, বাসাবাড়ির ছাদে আয়োজন হয় ডিজে পার্টি, নাইট পার্টির। গানের তালে তালে মেতে ওঠে তরুণ-তরুণীরা। এই প্রস্ততিও দেখা গেছে বেশির ভাগ বাড়ির ছাদে। একদিন আগেই মঞ্চ সাজিয়ে সাউন্ড বক্স নিয়ে প্রস্তুত তারা।
তবে গান বাজনার বিষয়টিকে অপসংস্কৃতি বলে মনে করেন স্থানীয় অনেকে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জন্মের পর থেকে বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। আমরা আগেও ঘুড়ি উৎস (সাকরাইন) করতাম। তখন ডিজে পার্টি, নাইট পার্টির আয়োজন ছিল না। এখন ডিজে পার্টির নামে মদপান প্রাধান্য পেয়েছে।
সাকরাইন উৎসবে স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তা ও সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান ৪৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ইমন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মহল্লায় সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে উৎসব পালন করার জন্য বলা হয়েছে। নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
এমজেএফ