ঢাকা: ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর দেশের ৩১টি আয়ুর্বেদিক ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিকে ‘কালো ’তালিকাভুক্ত করেছে। এরইমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে ওই সব কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জানায়, সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত দেশের ২০২টি আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানির মধ্যে ৩১টি কোম্পানিকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে নিম্নমান ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওষুধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের আনন্দমহী ওষুধালয়, ঢাকা মিরপুরের অ্যারন আয়ুর্বেদিক ওষুধালয়, ঢাকা সাভারের বাংলাদেশ ল্যাব, ঢাকা হাটখোলা রোডের বিগবেন ফার্মাসিউটিক্যালস, ঢাকার মধ্য বাসাবোর মেডিকা ল্যাবরেটরিজ, ঢাকা শান্তিনগরের সাইমন আয়ুর্বেদ ল্যাবরেটরিজ, ঢাকা মিরপুর বাজারের শাবা ওষুধালয়, ঢাকার শক্তি আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরিজ, ঢাকার মোহাম্মদপুরের ভেনাস ওষুধালয়।
ঢাকার বাইরে রয়েছে- ময়মনসিংহের আতিক ফার্মাসিউটিক্যালস, চট্টগ্রাম পাহাড়তলীর বনজী দাওয়াখানা লি:, দিনাজপুরের বেঙ্গল আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরিজ ও বেঙ্গল টেকনো কেমিক্যালস ওয়ার্কস, গাইবান্ধার শহীদুল্লাহ রোডের কনফিডেন্স ফার্মা, কুমিল্লার দাফি দাওয়াখানা, চট্টগ্রামের দেশজ ওষুধালয়, ময়মনসিংহের ঢাকা হারবিক ল্যাব, নারায়ণগঞ্জের ডনকো আয়ুর্বেদিক ফার্মাসিউটিক্যালস, টাঙ্গাইলের ডি-সান ফার্মাসিউটিক্যালস, ফেনী দাওয়াখানা, ফরিদপুরের ফিনিক্স আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরিজ, গাজীপুরের হাশেম ড্রাগ, সিলেটের হাইজেনিক ড্রাগ আয়ুর্বেদিক, চট্টগ্রামের জনতা আয়ুর্বেদিক, পাবনার জুয়েল আয়ুর্বেদিক, নারায়ণগঞ্জের এমসিআই লি:, রংপুরের মহিগঞ্জ ওষুধালয়, বগুড়ার ইউনিট ফার্মাসিউটিক্যালস।
এদিকে মানবহির্ভূত ওষুধ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিদফতর থেকে অধিদফতরে রূপ নেওয়ার এক বছর পরও গতিশীল হতে পারেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
অধিদফতরের এমন দুর্বলতার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে ভেজাল ওষুধ। দেশে প্রায় দু’শ’টি ওষুধ কোম্পানি নিম্নমানের ওষুধ বাজারজাত করছে। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের আবেদন করেই ওষুধ প্রস্তুত করে চলেছে। এর মধ্যে রয়েছে ওষুধ আদালতের সীমাবদ্ধতা।
সৃনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত না থাকায় ওইসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছে না ওষুধ আদালতও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডীন অধ্যাপক ডা: এবিএম আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, মানবহির্ভূত ওষুধ খেলে ওষুধ খাওয়ার উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, যেকোন মানবহির্ভূত ওষুধই জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। ওইসব ওষুধ খেলে হীতে বিপরীত হতে পারে। অন্য কতকগুলো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীরে দেখা দিতে পারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। রোগীর রক্ত উৎপাদনকাজ চরমভাবে ব্যাহত হতে পারে। এসব মান বহির্ভূত ওষুধ গ্রহণকারী কিডনি, হার্ট, ব্রেন, গ্যাস্টিক-আলসার ও রক্ত উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার মতো জটিল সমস্যায় পড়তে পারে । মান বহির্ভূত ওষুধ এড়িয়ে চলার জন্য জনসাধারণকে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা: এবিএম আব্দুল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১২
এমএন/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর