ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রূপপুরে আরএনপিপির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৯
রূপপুরে আরএনপিপির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে

ঢাকা: নিরাপত্তার দিক নিশ্চিত করেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। 

পৃথিবীর অন্য দেশগুলো সেভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও সেভাবে করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) জ্বালানি সরবরাহে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইয়াফেস ওসমান এসব কথা জানান।

 

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে রাশিয়ার পারমাণবিক জ্বালানি প্রস্তুত ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টিভিএল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এ চুক্তি স্বাক্ষর করে।  

বক্তব্যের শুরুতেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, এ মাসটি আমাদের জন্য দুঃখের মাস। এ মাসে আমরা আমাদের দেশের স্থপতিকে হারিয়েছি। যার ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল।  

ইয়াফেস ওসমান বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে হারানোর পর সেটা আর হয়নি। তার কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় উদ্যোগ নেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি হয়। সারা পৃথিবীতে যেভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন হয়, সেই একই ব্যবস্থাপনায় এ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন হচ্ছে। নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়টি নিশ্চিত করেই বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটা করছেন।  

তিনি বলেন, জাপানের ফুকুশিমায় পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রে দুর্ঘটনার পর আমি নিজে সাহস করে সেখানে গিয়েছি দেখতে, প্রধানামন্ত্রী আমাকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে দুর্ঘটনার পর কোনো সমস্যা হয়নি, একজন মানুষেরও প্রাণহানি হয়নি। প্রতিনিয়তই প্রযুক্তি উন্নত হয়। আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি কোর ক্যাচার স্থাপন করেছি। কোনো সমস্যা হবে না। যদি হয়ও, গ্যাস বের হতে পারবে না এ কোর ক্যাচারের কারণে।  

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, ফুকুশিমায় গ্যাস বের হতো, এখানে গ্যাস বের হবে না। মানুষের সমস্যা হতে পারে এমন কোনো কিছু আমরা করবো না। সবধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের নিরাপত্তা জাতীয় নিরাপত্তার কাছাকাছি। সারা পৃথিবী যেভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করে, আমরা সেভাবেই করছি। সেভাবেই চুক্তি করেছি। মানুষের ক্ষতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, সামান্য সম্ভাবনা নেই।  

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে নিউজ হয় না। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এ প্রকল্পটি এ দেশের মানুষের জন্য। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত হবে। এদেশের এক একজন শ্রমিক বিদেশে গেলে তার গুরুত্বও অনেক বাড়বে। এ প্রকল্পটি নিয়ে নানা ধরনের কথা-বার্তা হয়। এ প্রকল্পটি অন্য পাঁচটি প্রকল্পের মতো নয়। আমরা এমন কিছু করছি না, যা এদেশের মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই শেখ হাসিনা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন। অনুগ্রহ করে এমন কিছু লিখবেন না, যাতে এ প্রকল্পের ক্ষতি হয়। আন্তরিকভাবে কাজটির সঠিক মূল্যায়ন করবেন।  

এসময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া তথা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।  

তিনি বলেন, মুক্তিযু্দ্ধের সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন জাতিসংঘে তিন তিন বার ভোট দিয়ে আমাদের যুদ্ধ থেকে রক্ষা করেছিল। দুঃখের দিনের বন্ধুকে উষ্ণ ভালোবাসা। অনুষ্ঠানে তিনি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে নিয়ে নিজের লেখা কবিতা আবৃতি করেন।  

** আরএনপিপির জ্বালানি আনতে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই

বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
এসকে/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।