ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

স্থাপন হলো আরএনপিপি’র কোর ক্যাচার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৯
স্থাপন হলো আরএনপিপি’র কোর ক্যাচার 'কোর ক্যাচার' স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটে অন্যতম স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘কোর ক্যাচার’ স্থাপন করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে এই কোর ক্যাচার স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

শুক্রবার (৩ মে) অনুষ্ঠানিকভাবে কোর ক্যাচার স্থাপন প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়।

  এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

এই কোর ক্যাচার স্থাপনের বিষয়ে রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. সৌকত আকবর শুক্রবার বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, এই কোর ক্যাচার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বাধুনিক একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এটা আমাদের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রে স্থাপনের মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলো। এখন পর্যন্ত বিশ্বের এই কোর ক্যাচার আর মাত্র দুইটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের শিডিউল অনুযায়ী এ সময়ে এই কোর ক্যাচার স্থাপন করার কথা ছিলো তার এক মাস আগেই আমরা এটি স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এটা একটি আশার দিক। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে পারবো। 'কোর ক্যাচার' স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে, ছবি: বাংলানিউজরাশিয়ার আর্থিক সহযোগিতা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশটির রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন (রোসাটম) সহযোগী প্রতিষ্ঠান এএসই বাংলাদেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে কোর ক্যাচার স্থাপনর করা হয় গত বছরের ১৮ আগস্ট।

 

দ্বিতীয় ইউনিটের এই কোর ক্যাচার স্থাপনের সময় সেখানে আয়োজিত এক সভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ছাড়াও পারমাণবিক শক্তি কমিশন, রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ রায় বাংলানিউজকে জানান, এই সভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল অর্জন। এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছে। এই কাজ সফতার সঙ্গে সমাপ্ত করা মুক্তিযু্দ্ধের মতোই একটি যুদ্ধ। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলাম, এই যুদ্ধের আমরা সফল হবো।

রুশ বিশেষজ্ঞদের ডিজাইন করা কোর ক্যাচার একটি অন্যন্য কোণাকৃতির ডিভাইস যা রিয়্যাক্টর কোরের নিচে স্থাপন করা হয়ে থাকে। কোর ক্যাচারটিতে থাকে বিশেষ পদার্থ। প্রয়োজনের সময় ডিভাইসটি সব গলিত কোর বস্তু ধারন করে সম্পূর্ণভাবে আবদ্ধ করে ফেলবে। এর ফলে রেডিয়েশনের বাইরে আসার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ বিধায় এটির কার্যক্রম, মানুষের ওপর নির্ভর করবে না। প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসরণ করেই এটি কাজ করবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সাইটের বৈশিষ্টসমূহ বিবেচনা করেই কোর ক্যাচারটি ডিজাইন করা হয়েছে। উন্নত হাইড্রো-ডাইনামিক ও শক প্রতিরোধ গুণাবলিসম্পন্ন হওয়ায় এটি অধিকমাত্রায় ভূমিকম্প সহিষ্ণু। কোর ক্যাচারটিতে বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থাও যুক্ত করা হয়েছে।

রুশ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মীয়মান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুইটি ইউনিট থাকছে। প্রতিটি ইউনিট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে। রাশিয়ার সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের ভিভিইআর- ১২০০ রিয়্যাক্টর স্থাপন করা হচ্ছে এই প্রকল্পের ইউনিটগুলোতে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৯
এসকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।