ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

২০৪১’র মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬
২০৪১’র মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র, গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ, সেতু, পানি শোধনাগার, রেললাইন, জুডিশিয়াল ভবন এবং বিভিন্ন অবকাঠামোসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৫১টি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এ কথা জানান।



বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে স্ব স্ব এলাকার মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাদেশে উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছি। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের শান্ত্বনা, আমরা মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের মহাপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালে আমরা কি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবো তার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আমরা ২০১৬ সালে ১৬ হাজার মেগাওয়াট, ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার এবং ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। দোয়া করবেন, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়।

প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ১৪ হাজার ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করেছি। এরই মধ্যে ৭৬ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি। যেসব এলাকায় গ্রিডলাইন নেই, সেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সারাদেশকে রেল নেটওর্য়াকের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বরিশাল কখনো রেল দেখেনি, সেখানেও রেল যাবে। পটুয়াখালী, পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরুর জন্য রেলমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন তিনি।

রেলের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রেলে অল্প খরচে চলাচল ও মালামাল পরিবহন করা যায়। এজন্য সরকার রেলের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সড়ক যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার যতো সেতু ও সড়ক নির্মাণ করেছে আর কেউ তা করেনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এ পর্যন্ত ৫৩৭টি সড়ক সেতু নির্মাণ করেছে। পদ্মাসেতু নির্মাণ করছে।

ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুয়াকাটা এমন একটা জায়গা যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে বিভিন্ন স্থানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে পানি শোধনাগরের উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হবেন। পানি শোধন করতে অনেক খরচ হয়।

নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নগরকে উন্নত করতে চাই। মানুষের জীবন-মান উন্নত করতে চাই।

স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতার আর্দশ নিয়ে আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। সরকার সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। আমরা চাই, বাংলাদেশের একটি মানুষও ঘর ছাড়া থাকবে না, বিনা চিকিৎসায় থাকবে না, কেউ না খেয়ে থাকবে না।

জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে, আমাদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। এজন্যই আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে কাজ করতে পারছি।

প্রথমে তিনি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় ৯০টি গ্রামের ৬০০০ পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

এরপর চট্টগ্রামের পটিয়ার ১০৮ মেগাওয়াট ইসিপিভি চট্টগ্রাম লিমিটেড, কুমিল্লার জাঙ্গালিয়ার ৫২ দশমিক ২ মেগাওয়াট লাকধানাভি বাংলা পাওয়ার লি., গাজীপুরের কড্ডার ১৫০ মেগাওয়াট বিপিডিবি-আরপিসিএল পাওয়ারজেন লি. এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট) বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি।

পটুয়াখালী জেলায় পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে নবনির্মিত শেখ কামাল সেতু ও শেখ জামাল সেতু, সিলেট সড়ক জোনে ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ইবিবিআইপি) আওতায় নবনির্মিত ১৬টি সেতু, সিগনালিং ব্যবস্থাসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ২য় রেললাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন, নারায়ণগঞ্জ শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সোনাকান্দা পানি শোধনাগারেরও উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

এছাড়াও তিনি জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনসহ এ জেলার বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন।

যেগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে সেগুলোর কাজ ভালোভাবে করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহি, স্থানীয় সরকার সচিব, রেল সচিব, সড়ক ও সেতু বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব।

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র আইভী রহমান, ভৈরব থেকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও বিসিবি’র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, কুমিল্লা থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়র আজম নাসির, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও ১০ জেলা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬
এমইউএম/আরআই/এএসআর/এমএমকে

** জয়পুরহাটে ২৯৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ১২ প্রকল্প উদ্বোধন
** আশুগঞ্জে পাওয়ার প্লান্টের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
** লাকধনাবি বাংলা পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
** কোটালীপাড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।