ঢাকা: পাবনার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে সরকার।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুভাসকিং চুক্তিপত্রে সই করেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
চুক্তি অনুযায়ী ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার (১ লাখ এক হাজার কোটি টাকা) ব্যয়ে এ কেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল সাত (০৭) বছর ধরা হয়েছে।
![](files/December2015/December25/signing_ML2_138819209.jpg)
রাশিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ এবং পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল সৃষ্টি করবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরপর শুরু হবে মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ।
ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৩ দফা আলোচনার ভিত্তিতে ৪৭টি অনুচ্ছেদ এবং ৫৭৩টি উপ-অনুচ্ছেদে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হয়। চুক্তির প্রস্তাব গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) অনুমোদন দেয় সরকার।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় সীমিত আকারে হওয়ার কথা ছিল ১০ মেগাওয়াট। কিন্তু সে উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একই স্থানে রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম অবস্থায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা থাকলেও এখন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, বলেন অর্থমন্ত্রী।
![](files/December2015/December25/signing_ML1_468328049.jpg)
তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এতে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম বর্জ্য অনেকখানি নিরাপত্তার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশের জন্য কঠিন এ কাজটির দায়িত্ব নিয়েছে রাশিয়া। এটি আমাদের জন্য খুবই ভালো দিক রাশিয়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে।
অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন ২০২৪ সালে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হবে। অনুষ্ঠানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য শুভকামনা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত আগস্ট মাসে পাবনার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়। আইন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ’।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সজান্ডার এ নিকোলায়েভ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫/আপডেট ১৯২২, ২১০০ ঘণ্টা
এএসএস/আইএ