ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘নির্লোভ-নিরহংকার ছিলেন সাহারা খাতুন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
‘নির্লোভ-নিরহংকার ছিলেন সাহারা খাতুন’

ঢাকা: প্রয়াত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মধ্যে কোনো লোভ বা চাওয়া-পাওয়া ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, সাহারা খাতুন জীবনের পুরোটা সময় রাজনীতি করেছেন।

দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তিনি নির্লোভ-নিরহংকার ছিলেন।

শনিবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যার পর রাজধানীর উত্তরা লেডিস ক্লাবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা ও স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন ।

তিনি বলেন, সাহারা খাতুন সব সময় আামাদের স্নেহের মধ্যে রেখেছেন। আন্দোলন সংগ্রাম করতে প্রথম সারিতে তাঁকে দেখা গেছে। মানুষকে কাছে টানার যে দক্ষতা সেটি তাঁর মধ্যে ছিলো। তিনি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন, প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজ সেই মানুষটি আমাদের মাঝে নেই।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সাহারা খাতুন এমন এমন একজন নেতা ছিলেন, যার মধ্যে ‘নো’ বলে কোনো শব্দ ছিল না। তাঁকে যেখানে আমন্ত্রণ/দাওয়াত করা হতো তিনি সবখানে যেতেন। আমরা অনেক সময় দাওয়াত পেলেও যেতে চাই না। কিন্তু তিনি কখনও কাউকে না করতেন না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তাঁর জন্মস্থান ক্যান্টনম্যান্ট এলাকা হলেও তিনি বেশি সময় তেজগাঁও থাকতেন। আমার বাসা ঠিক তাঁর বাসার বিপরীতে ছিলো। প্রায় সময় তাঁর বাসায় যেতাম। তখন তাঁর বাসায় অনেক মানুষের ভিড় দেখা যেত। তিনি সবার সঙ্গেই কথা বলতেন, সবার কথাই শুনতেন। তিনি সফলভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। সাহারা আপাকে আমরা বড় বোনের মত দক্ষ একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখেছি।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টায় বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে। তাঁর দূরদর্শি নেতৃত্বের কারণে ধীরে ধীরে আমরা উন্নতির দিকে যাচ্ছি। তাঁর ধমনীতে প্রবাহিত রয়েছে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত। সাহারা আপা প্রধানমন্ত্রীর খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন অসুস্থ হয়ে পড়তেন, তখন সাহারা আপা সজাগ হয়ে উঠতেন।

তিনি বলেন, সাহারা আপা অনেক ভালো কাজ করে গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা করুন, আমিন।

ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান বলেন, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন আপার মধ্যে কোনো অহংকার ছিলো না, কোনো দাম্ভিকতা ছিলো না, তিনি সব সময় মানুষের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। অনেক মানুষ অনেক কথা বলতেন, আমরাও যদি কোনো কথা বলতাম তবে তিনি কখনও রাগ করতেন না। তিনি ডেকে শুধু বলতেন মন দিয়ে কাজ করো।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আমাদের সাহারা আপা তাঁর পরিবারের জন্য ভাবতেন না। তিনি যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। এই ক্ষমতা ব্যবহার করে তার পরিবারের যেসব সদস্যরা জোর খাটাতেন, তাদের সবাইকে তিনি দলের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলতেন দলের নেতা-কর্মীরাই আমার সন্তান। তাদের কারণে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছি। সাহারা খাতুনের নাম ব্যবহার করে অনেকেই অনেক টাকার মালিক হয়েছেন, সম্পদের মালিক হয়েছেন, অনেকে ক্ষমতার সোপানেও উঠেছেন। কিন্তু যখন সাহারা আপা মারা যান, তখন তাদের কেউ আসেন নি। কিন্তু ওইসব নেতারা আপার নাম ব্যবহার করেই বড় হয়েছেন।

উত্তরা লেডিস ক্লাবের সভাপতি ইসমে আরা হানিফের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের কিউরেটর অতিরিক্ত সচিব এন আই খান, লেডিস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাহানারা ইমাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২২
এসজেএ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।