ঢাকা: ক্ষমতাচ্যুত সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ ও হত্যা মামলা করতে যাচ্ছেন স্বৈরাচার ও সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহীম সেলিমের পরিবার।
মামলার প্রস্তুতি হিসেবে সেলিমের ভাই সাংবাদিক এম হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এরই মধ্যে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
তবে কাকে মামলার আইনজীবী নিয়োগ করছেন জানতে চাইলে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান হাফিজুর রহমান।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। সেলিমের কয়েকজন বন্ধু এ মামলার বিষয়ে বেশি সহযোগিতা করছেন। ’
অপর এক সূত্র জানায়, নিহত সেলিমেরই সহপাঠী সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন আইনজীবী এ মামলা পরিচালনা করবেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ডাকসু ভবন থেকে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এক স্বৈরাচারবিরোধী মিছিল শহীদ মিনার- ঢাকা মেডিকেল কলেজ- চাঁনখারপুল হয়ে গুলিস্তান যাচ্ছিল। ফুলবাড়িয়া পুরনো বাসস্ট্যান্ডে বর্তমান জাকের মার্কেটের সামনে মিছিলটির ওপর হঠাৎ ট্রাক উঠিয়ে দিলে ঘটনাস্থলেই ছাত্রলীগ নেতা সেলিম ও দেলোয়ার মারা যান। কিন্তু সে সময় স্বৈরশাসক এরশাদ ও সামরিক শাসনের চোখরাঙানির কারণে মামলা করা সম্ভব হয়নি।
তবে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যূত্থানে এরশাদ ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেলিমের মেজভাই এম হাফিজুর রহমানই মামলাটি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত অর্থের অভাবে মামলাটি চালাতে পারেননি তারা।
নিহত সেলিমের মেয়ে ডোরিথ (২৩) বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার সময় আমার বয়স ছিলো মাত্র চার মাস। বাবার আদর-স্নেহ বোঝার আগেই এতিম হয়েছি আমি। এর চেয়ে পোড়া কপাল আর কি হতে পারে!’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে ডোরিথ বলেন, ‘বাবার বন্ধুরা এখন বড় বড় অফিসার, কোটিপতি। আর আমার বাবাই নেই। তাই পড়াশোনাও শেষ করা হয়নি। এখন আমি বাবার হত্যাকারী এরশাদের বিচার চাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১০