ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

ফখরুলের ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা সন্দেহ হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
ফখরুলের ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা সন্দেহ হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী ফাইল ছবি

ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছে।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এসময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন এই ভ্যাকসিনের ওপর নাকি তাদের আস্থা নেই। এই ভ্যাকসিনের ওপর পুরো পৃথিবী আস্থা স্থাপন করেছে। ভারতে কোটি কোটি মানুষকে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। আর অন্যদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, এই ভ্যাকসিনের ওপর জনগণের আস্থা নেই। বালখিল্য প্রলাপের মতো তিনি বলেছেন, এই ভ্যাকসিন প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হোক।

তিনি বলেন, আমার সন্দেহ হচ্ছে মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি আবোল তাবোল বলে। এই রোগটি শুধু মানুষের হয় তা নয়। বানর হনুমানেরও হয়। তারাও উল্টাপাল্ট কাজ করে চিৎকার করে। মানুষও বুড়ো বয়সে অপ্রাসঙ্গীক অবান্তর নানা ধরনের কথা বলে। তাই আমার সন্দেহ হচ্ছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের এই ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা। তিনি যেভাবে গতকাল ইয়ারকি করার মতো কথা বলেছেন একজন দায়িত্বশীল নেতার মুখ থেকে কখনো এ ধরনের বক্তব্য আশা করা যায় না। আমি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবসহ বিএনপির নেতা কর্মীদের অনুরোধ জানাবো সরকারের সাফল্যে আপনাদের মুখ ম্লান হয়েছে। তাই বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে নোংরা খেলায় নেমেছেন এটি দেশ জাতি ও জনগণের সাথে প্রতারণা। দয়া করে আপনারা সে প্রতারণাটা করবেন না।  

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি আশা করেছিল সরকার সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন আনতে পারবে না। যখন সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন চলে আসলো তখন তারা প্রশ্ন তোলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমাদের জলবায়ুর জন্য পৃথিবীতে কার্যকর যে কয়টি ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। কোটি কোটি মানুষের উপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমাদের দেশেও যারা ফ্রন্টলাইনার তাদের এই ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সরকার প্রথমে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।  

‘যখন দেশে ভ্যাকসিন চলে আসলো তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলো এই ভ্যাকসিন নিয়ে লুটপাট হবে। অর্থাৎ এই ভ্যাকসিন শুধু মাত্র ক্ষমতাবানদের দেওয়া হবে। তাদের সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম যে, বিএনপি আগে ভ্যাকসিন নিতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো তাদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য। এখনতো তাদের কথায় মনে হচ্ছে বিএনপি আদৌ ভ্যাকসিন নিতে চায় না। এখন সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন, বিএনপি ভ্যাকসিন নিতে চায় কিনা? আমি রুহুল কবির রিজভী সাহেবকে বলবো, উনি ও তাদের মহাসচিব যেভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন, এই বিভ্রান্ত করার নোংরা রাজনীতি বন্ধ করুন।  
 
জনপ্রতিনিধিরা কখন ভ্যাসকিন পাবে, রাজনীতিবিদদের আগে ভ্যাকসিন নিতে হবে, পরে জনগণ নেবে এ ধরনের আলোচনা হচ্ছে সে বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রথমে টিকা পাওয়ার অধিকার রাখেন স্বাস্থ্যকর্মীসহ যারা করোনার মধ্যে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে কাজ করেছেন। সরকার সেভাবেই একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে। করোনার সময় জনপ্রতিনিধিরা জনগণের পাশে ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমার অধিকারটা আগে নয়। কেউ যদি মনে করে পথ দেখানোর জন্য আমাদের আগে টিকা নিতে হবে, সেক্ষেত্রে ভলান্টিয়ার হিসেবে নিতে কোনো আপত্তি নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বিএনপি জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। শুধু মাত্র সংবাদ সম্মেলন, মাঝে মধ্যে দুই একটি মানববন্ধনের মধ্যেই তারা সীমাবদ্ধ ছিল। জনগণের জন্য কিছু লোক দেখানো ফটোসেশান করেছে ত্রাণ তৎপরতা দিয়ে। যেখানে আমাদের দলের পক্ষ থেকে এক কোটি ২৫ লাখ প্যাকেট ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। কয়েক কোটি টাকাও বিতরণ করা হয়েছে। এক কোটি ২৫ লাখ লোকের কাছে খাদ্য সহায়তাসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এতে আমাদের বহু নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ও মৃত্যুবরণ করেছে। তারপরও আমরা কেউ থেমে যাইনি। মন্ত্রিসভার প্রায় এক তৃতীয়াংশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সুস্থ হয়ে আবার সবাই কাজে নেমে পড়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বের কারণে।  

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের একটি ভুল সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছিলেন সেটি অত্যন্ত হাস্যকর এবং ষড়যন্ত্রমূলক ছিল। সেটির ব্যাখ্যা ভারত সরকার, সিরাম ইনস্টিটিউট ও ভারতের স্বাস্থ্যসচিব দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
জিসিজি/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।