ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নে তৎপর ইসি: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নে তৎপর ইসি: ফখরুল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নেই তৎপর রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই দলের পক্ষ থেকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সরিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন-২০২০ প্রণয়ন, নির্বাচনী আইন (পিআরও) সংশোধনী প্রস্তাব এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনী আইন-২০২০ প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ: বিএনপির প্রতিবাদ ও প্রত্যাখ্যান’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি এদেশের মানুষ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোনো রাজনৈতিক দলের ন্যূনতম শ্রদ্ধা কিংবা আস্থা নেই। আর এজন্য নিঃসন্দেহে গত ১০ বছরে বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে যারা গলাটিপে হত্যা করেছে কেবল তারা এবং তাদের সহযোগী হিসেবে নির্লজ্জ ভূমিকা রাখা বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর বশবর্তী নির্বাচন কমিশনই দায়ী। এ নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে এবং একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিস্ময়কর কর্মকাণ্ডের জন্য ইতোমধ্যেই কুখ্যাতি অর্জন করেছে। তারা গত সাড়ে তিন বছরে তাদের মেয়াদকালে অনেক অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের জনস্বার্থবিরোধী মানসিকতাই শুধু প্রকাশ পায়নি, অসততা ও অযোগ্যতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু করার ইচ্ছা বর্তমান কমিশনের নেই। ২০১৪ সালে নির্বাচন করেছে রাজনৈতিক দলবিহীন। ২০১৮ সালে করেছে ভোটারবিহীন নৈশ নির্বাচন। আর প্রস্তাবিত আরপিওর মাধ্যমে আগামীতে করতে চায় নির্বাচন কমিশনবিহীন প্রহসনের নির্বাচন। ’

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে করোনা ভাইরাস মহামারি এ গ্রহের সব মানুষের স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহ বিপর্যস্ত করেছে। বাংলাদেশও এ থেকে মুক্ত নয়। দেশে স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা ফিরে আসেনি। বরং পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে পড়ছে। এমন পটভূমিকায় এ পর্যায়ে জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নতুন যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্পূর্ণভাবে অপ্রত্যাশিত। আর তা যদি হয়, দীর্ঘমেয়াদে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কিংবা জনগণের ভোটাধিকার বা অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে জড়িত, তাহলে সে বিষয়ে ন্যূনতম সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বর্তমান মহামারির সময় নিঃসন্দেহে অনুপযুক্ত। ’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এ সময়টি বেছে নিয়েছে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আরপিওর অনেকগুলো মৌলিক সংশোধনী আনার জন্য। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের এ উদ্যোগ অপ্রয়োজনীয়, হঠকারী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ’

তিনি বলেন, ‘জানা গেছে, নানা সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) নাম পরিবর্তন এবং প্রার্থিতা বাতিলে ইসির ক্ষমতা বাদ দেওয়ার প্রস্তাবনা থেকে পিছু হটেছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও পদের নাম বাংলায় রূপান্তরের উদ্যোগ থেকেও পিছু হটেছে কমিশন। তবে বিষয়টি এখনো খুব স্পষ্ট নয়। কমিশনের সচিব দাবি করেছেন তারা ‘ভুল করে’ বা ‘বোঝাপড়ার মাধ্যমে’ প্রস্তাবগুলো করেছিলেন। যেভাবেই করা হোক না কেন, এটি বিস্ময়কর, বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের ন্যায় একটি সাংবিধানিক কমিশনের জন্য। কিন্তু উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। কারণ এ কমিশনের কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নাই। তারা কী কারসাজিতে যুক্ত তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাদের অতীত কর্মকাণ্ডে বরং এটি স্পষ্ট যে, নির্বাচন কমিশন সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নেই তৎপর রয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
এমএইচ/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।