ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

চট্টগ্রামে ঈদে এক কাতারে রাজনৈতিক নেতারা

রমেন দাশগুপ্ত, স্টাফ করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১০
চট্টগ্রামে ঈদে এক কাতারে রাজনৈতিক নেতারা

চট্টগ্রাম: একই রাজনৈতিক দল কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে নেতৃত্বকেন্দ্রিক বিরোধ চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। এখানে এ বিরোধ-বৈরিতা কখনো কখনো সংঘাতের রূপ নেওয়ার বিষয়টিও সবার জানা।

তবে প্রতি বছরই দুটি ঈদের জামাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তিক্ত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে উঠে এক কাতারে দাঁড়ান চট্টগ্রামের রাজনৈতিক নেতারা।

সেই ধারাবাহিকতায় শনিবারও নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে প্রথম ঈদ জামাতে রাজনৈতিক বৈরিতা ভুলে এক কাতারে দাঁড়িয়েছিলেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন, চট্টগ্রামের মেয়র এম মনজুর আলম, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি ও সাংসদ নূরুল ইসলাম বিএসসি, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, দণি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাংসদ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দণি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, নগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সোলায়মান আলম শেঠ, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

মতাসীন দল আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের প্রশ্নে বিরোধ রয়েছে মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমিন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নূরুল ইসলাম বিএসসির মধ্যে। তিন নেতাই চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের তিনটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে ঈদের নামাজ আদায় শেষে তিন নেতাই সে বিরোধ ভুলে একসঙ্গে কোলাকুলি করেছেন, পরস্পরের সঙ্গে করেছেন শুভেচ্ছা বিনিময়।

আর নামাজের ফাঁকে এক সময়ের রাজনৈতিক গুরু এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বাসায় ঈদের দাওয়াতও দেন সিটি মেয়র এম মনজুর আলম। নামাজ শুরুর আগে হাস্যরসেও মেতে ওঠেন চট্টগ্রামের সাবেক ও বর্তমান দুই নগরপিতা। অথচ মাত্র চার মাস আগে গুরু মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন শিষ্য মনজুর আলম।

‘মহিউদ্দিন চৌধুরী দাওয়াত নিয়েছেন কিনা’- নামাজ শেষে চট্টগ্রামের মেয়র এম মনজুর আলমকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি হেসে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ নেই। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে চট্টগ্রামের উন্নয়ন করতে চাই। ’

একই প্রশ্ন মহিউদ্দিন চৌধুরীকে করা হলে তিনি হেসে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘অ-বাজি খালি গুঁতা ক্যা দ (বাবা, শুধু শুধু কেন গুঁতো দেন)। ’

আবার নেতৃত্বের প্রশ্নে মনোমালিন্য চলছে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান এবং তার হাতেগড়া নগর বিএনপির সহসভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেনের মধ্যে। ঈদের নামাজে তিনজনই ছিলেন এক সারিতে।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সাল থেকে তৎকালীন সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর উদ্যোগে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে রাজনৈতিক নেতাদের একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায়ের সংস্কৃতি শুরু হয়।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈদ মানেই মিলনের উৎসব। বৈরী রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটাতে চট্টগ্রামে এ সংস্কৃতি চালু করেছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ সং®কৃতি শুধু ঈদের নামাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।