ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

দল নিবন্ধনের শর্ত কড়াকড়ি না করে শিথিল রাখা উচিত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২০
দল নিবন্ধনের শর্ত কড়াকড়ি না করে শিথিল রাখা উচিত

ঢাকা: রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নতুন আইনে শর্ত কড়াকড়ি না করে বরং কিছুটা শিথিল রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

নতুন দল নিবন্ধন আইনের খসড়ার ওপর মতামত দেওয়ার জন্য নাগরিক সমাজকে ইসি আহ্বান জানালে সুজন এমন মতামত দেয়।

সংগঠনটির লিখিত প্রস্তাবনায় আইনে ধারা অনুযায়ী মতামত দেওয়া হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সবস্তরের কমিটিতে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারীকে সদস্য রাখার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, নির্বাচন কমিশন তার সময়সীমা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।  

নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক মনে করে এ সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের মতো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের জন্য আত্মঘাতী। কেননা মানুষের প্রত্যাশা যখন একটি স্বাধীন, সাহসী ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের তখন নির্বাচন কমিশন এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দুর্বল করছে। এটা একদিকে যেমন রাজনৈতিক দলের কাছে নির্বাচন কমিশনের নতজানু মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ; তেমনি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ তথা নারীর ক্ষমতায়নের পরিপন্থী।  

নিবন্ধনের শর্তে কড়াকড়ির বিষয়ে সুজন বলছে-প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে দু'টি প্রধান শর্ত পূর্ণ করতে হবে। আগে একটি পূরণ করলেই হতো।

সুজন মনে করে নতুন দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নতুন আইনের খসড়ায় উল্লেখিত প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। নিবন্ধনের পূর্বশর্তগুলো খুব বেশি কড়াকড়ি না করে বরং কিছুটা শিথিল রাখা উচিত- যাতে নতুন রাজনৈতিক শক্তির উন্মেষের পথ খোলা থাকে।    

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) অনলাইনে একটি সংবাদ সম্মেলনও করে সুজন।

এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন জনগণের কাছে দায়বদ্ধ, কোনো দলের কাছে নয়। এ আইনটি প্রণয়নের উদ্দেশ্য কি জনস্বার্থ না রাজনৈতিক দলের স্বার্থ এটাই আমার কাছে বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক দল যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে লক্ষ্য হওয়া উচিত দলগুলোকে গণতান্ত্রিক করা। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দীর্ঘদিন ধরেই জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করে আসছে, নানা অপকর্ম করে আসছে। আমি মনে করি এ আইনটা এ অপকর্মেরই ধারাবাহিকতার অংশ।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে এমন উদ্ভট, বিবেচনাহীন সব বিষয় সামনে আসে এসব নিয়ে সুস্থভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো কঠিন। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যদি মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবো। নির্বাচন কমিশন এখন আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্যোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কমিশন জাতির অগ্রগতির পথে অনেক বড় অন্তরায় হয়ে আবির্ভূত হয়েছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ উদ্যোগ চরম আপত্তিকর, অগণতান্ত্রিক, অগ্রহণযোগ্য ও সংবিধান বিরোধী। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কীভাবে জনগণের অধিকার চর্চা সংকুচিত করার মতো উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে আমার কাছে পরিষ্কার না। আমি বলব এটা একটি অগ্রহণযোগ্য সংস্থার চরম অগ্রহণযোগ্য একটি কাজ। এর ফলে আমাদের ন্যূনতম গণতন্ত্র চর্চার সুযোগও থাকবে না।
  
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার বলেন, জাতীয় জীবনে করোনার মতো একটা দুর্যোগ চলাকালীন এ রকম একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ রকম একটি আইন প্রণয়ন করতে হলে সবদলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কমিশনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে ঘাটতি আছে বলে আমার মনে হয়।   

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২০
ইইউডি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।