ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে: মির্জা ফখরুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২০
সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সরকারি তথ্য-উপাত্ত ‘সঠিক’ নয় দাবি করে ‘সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বুধবার (৭ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে যে আক্রান্ত, অসুস্থ, সুস্থ ও মৃত্যুর ডাটাগুলো দেয়া হচ্ছে-আমার তো মনে হয় দেশের কোনো মানুষ তা বিশ্বাস করে না।

এটা বিজ্ঞানের কথা। সংক্রমণ যখন বাড়ছে, তখন মৃত্যু ২/৩/৪ এ এসে পৌঁছাছে। অথচ সেদিনই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) পরিচালক বলছেন যে, আমার এখানে ৩১ জন মারা গেছেন। কয়েকজনের ডায়গোনোসিস হয়েছে করোনা পজেটিভ। বাকীদেরটা আমরা এখন পর্যন্ত টেস্ট করিনি। আমাদের কাছে তথ্য হচ্ছে যে, টেস্ট করা হয় না, নির্দেশটা হচ্ছে টেস্ট করতে মাঝে মাঝে। এটাকে কী সরকার বলবেন আপনারা? যাদের এতটুকু দায়িত্ববোধ নেই, যারা চরম দুর্দিনেও জনগণকে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, প্রতারণা করছে। এটা ক্রিমিনাল অফেন্স ছাড়া কী বলবো আমরা?’ 

ফখরুল বলেন, ‘আজকে প্রশ্ন হচ্ছে জীবনের, প্রশ্ন হচ্ছে, নার্থিং ইজ মোর প্রেসাচ দেয়ার লাইফ। আর এরা খুলে দিয়েছেন শপিংমল। কেন? ঈদের বাজার করতে হবে আর অর্থনীতিকে চালু রাখতে হবে। এতদিন কী করলেন? এ যে মধ্য আয়ের দেশে চলে গেলেন, অর্থনীতি আপনার রোল মডেল বিশ্বের মধ্যে। কেন বর্তমান অবস্থাকে ধারণ করার মতো শক্তি এ ইকোনমির তৈরি হয়নি। কারণ আপনারা পুরোটাই মিথ্যা কথা বলেছেন, মানুষকে প্রতারণা করেছেন, ভুল বুঝিয়েছেন। ’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। যখন স্বাভাবিক অবস্থা ছিল তখনও ব্যর্থ হয়েছেন, আজকে যখন যুদ্ধাবস্থা বলা যেতে পারে চরম দুযোর্গ-মহামারি সেই সময় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে। আমরা যখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি তখন আপনি সেটাকে নাকচ করে দিয়ে বলেছেন কোনো দরকার নেই। ’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেন বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব অত্যন্ত সুবেশি ও টিপটপ জেন্টেলম্যান। তিনি সুযোগ পেলেই বিএনপিকে আক্রমণ করেন। আমি একটা কথা বলতে চাই, আপনি যে কথাগুলো বলেন, সেটা কি পরে আবার শোনেন, কি বলছেন? শোনা উচিত এজন্য যে, তাহলে নিজেই বুঝবেন যে, জনগণ আপনার কথা বিশ্বাস করছে না, তাহলে নিজেই বুঝবেন যে, এ কথাগুলো সঠিক নয়। ’

গার্মেন্টস খুলে দিয়ে ক্ষমাহীন অপরাধ করেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে প্রতিটি মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ যে গার্মেন্টসগুলোকে তারা (সরকার) খুলে দিলেন, গার্মেন্টস খুলে দিয়ে কী করলেন? বাইরের এলাকাগুলো থেকে সব চলে এলো যারা সংক্রমিত হয়ে চলে গিয়েছিল আবার সংক্রমিত হয়ে ফেরত এলো। আজকের পত্রিকায় নিউজ আছে যে, কুমিল্লায় সংক্রমিত হয়ে গেছেন তিন দিন আগে, তাকে তার বাসায় ঢুকতে দেয়নি তার সন্তান-স্ত্রী, তার বোনের বাসা গেছেন, সেখানে সে মারা গেছেন। এ যে ভয়াবহ পরিণতির দিকে তারা (সরকার) গোটা জাতিকে ঠেলে দিচ্ছেন-এটা ক্ষমাহীন অপরাধ। আমি তো মনে করি যে, দিস ইজ এ ক্রিমিনাল অফেন্স। এ ধরনের ভুল, এটা ভুল নয়, এগুলো হচ্ছে ক্রিমিনাল অফেন্স। ’

করোনা ভাইরাস সংবাদ সংগ্রহের গণমাধ্যমের ভুমিকার প্রশংসা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণমাধ্যমের যারা সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ পরিবেশ করছেন তাদের কী অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় ছাঁটাই হয়ে গেছেন এ দুঃসময়ে, অনেক প্রতিষ্ঠানে বেতন বন্ধ হয়ে আছে তিন মাস যাবৎ। সেখানে কিন্তু সরকারের কোনো প্রণোদনা নেই। এ যে সরকার ৯৫ হাজার কোটি টাকার একটা প্রণোদনা ঘোষণা করেছে যেটাকে আমরা বলেছি যে পুরোটাই শুভংকরের ফাঁকি। সেই প্রণোদনাতে সাংবাদিকদের কথা কিছুই বলা নেই। ’

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যবস্থাপনায় গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিই) দেওয়া উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান হয়। পরে রিপোর্টারদের হাতে পিপিই তুলে দেন বিএনপির মহাসচিব।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সহসভাপতি রাশেদুল হক বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল উদ্দিন, প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ও আতিকুর রহমান রুমন উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২০
এমএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।