ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

রাজনীতিকরা কে কোথায় ঈদ করবেন

মান্নান মারুফ, শামীম খান, আসাদ জামান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১০
রাজনীতিকরা কে কোথায় ঈদ করবেন

ঢাকা: রাজধানী ঢাকাতেই ঈদুল ফিতর কাটবে বেশীরভাগ রাজনৈতিক নেতার। তবে নির্বাচনী এলাকাতেও ঈদ করবেন অনেকে।

কেউবা আবার ঢাকায় ঈদের নামাজ পড়েই রওয়ানা হবেন নিজের নির্বাচনী এলাকায়। কেউ কেউ গ্রামের বাড়িতে ঈদের নামাজ পড়ে চলে আসবেন ঢাকায়। এছাড়া দেশের বাইরেও ঈদ করবেন অনেক নেতা। কারাবন্দি নেতার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে প্রায় প্রত্যেক নেতাই নির্বাচনী এলাকায় গণ-সংযোগটাও ঝালিয়ে নিতে চান। তাই দুস্থদের হাতে শাড়ি-লুঙ্গি, যাকাতের কাপড় এবং ফিতরার টাকা তুলে দেবেন তারা। এরই মধ্যে অনেকেই এসব বিতরণ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নেতাদের পারিবারিক সূত্র। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এদের অনেকেই নিজ হাতে যাকাতের কাপড় বিতরণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উদযাপন করবেন ঢাকায়। ঈদের নামাজের পর গণভবনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার সেনানিবাসের বাসা থেকে চলে আসবেন ইস্কাটন লেডিস কাবে। দুপুর পর্যন্ত সেখানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে ঈদশুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। সন্ধ্যায় তার গুলশানে কার্যালয় দলীয়  নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সপরিবারে লন্ডন রয়েছেন। ঈদের আগেই দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার। সম্ভব না হলে লন্ডনেই ঈদ করবেন। আর ইউরোপ সফররত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ঈদ করবেন নেদারল্যান্ডে।

চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্ত্রী-কন্যাসহ ঈদ করবেন সেখানেই। তার ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো ঈদ করবেন ব্যাংককের হাসপাতালে।

ঈদের আগেই মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ ছাত্তার ঈদ করবেন দুবাইতে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে ঢাকায় ঈদ করবেন উপদেষ্টা মণ্ডলী সদস্য আমির হোসেন আমু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে ঢাকায় ঈদ করবেন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান ও এমকে আনোয়ার, ভাইস-চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ঢাকা সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা প্রমুখ।

জামায়াত নেতাদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম ঢাকায় ঈদ করবেন।

জাতীয় পার্টি  চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ ঈদ করবেন ঢাকায়।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ঈদ করবেন ঢাকায়। বিকেলে মুন্সীগঞ্জে তার নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার কথা।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান ঢাকা ও তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে ঈদ করতে চান। তবে ঈদের দিন তিনি ঢাকা থেকে জামালপুরে নাকি জামালপুর থেকে ঢাকায় আসবেন তা এখনো ঠিক করেননি।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লায় তার নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করে বিকেলেই চলে আসবেন ঢাকায়। চট্টগ্রামের রাউজানে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ঈদ করবেন গ্রামের বাড়িতে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ ভোলায়, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী শেরপুর, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন নেত্রকোনা, বিএম মোজাম্মেল হক শরীয়তপুর, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুর ও মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেটে ঈদ করবেন।

ঢাকায় যারা ঈদ করবেন তাদের অধিকাংশই জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়তে চান। আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলোর নেতারা নামাজ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘শুভেচ্ছা বিনিময়’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

আর বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতারা নামাজের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘শুভেচ্ছা বিনিময়’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

এবার কারাগারেও ঈদ করবেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদ করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক সাংসদ নাসির উদ্দিন পিন্টু, আরিফ কমিশনার প্রমুখ। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলন ঈদ করবেন কুমিল্লা কারাগারে।

জামায়াত নেতাদের মধ্যে কারাগারে ঈদ করবেন আমীর ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা, ঢাকা মহানগর জামায়াত আমীর রফিকুল ইসলাম খান, রাজশাহী মহানগর জামায়াত আমীর আতাউর রহমান, খুলনা মহানগর জামায়াত আমীর ও সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।