ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

বিএনপি

জনগণের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব সরকারের: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২০
জনগণের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব সরকারের: রিজভী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

ঢাকা: ‘বর্তমান সংকটে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরার পরও মন্ত্রীরা কারণে-অকারণে বিএনপির বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কথা বলা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের কথার জবাব দিয়ে বিএনপি সময় নষ্ট করতে চায় না। আমরা বরং সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, যেহেতু রাষ্ট্রীয় অর্থ, রাষ্ট্রীয় যন্ত্র আপনাদের হাতে সেহেতু এই মুহূর্তে দেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানো আপনাদের দায়িত্ব।’

সোমবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, এতদিন মন্ত্রীদের ভাষায়-আমাদের দেশ তো সিঙ্গাপুর- ব্যাংকক ছিল! বিশ্বের রোল মডেল ছিল।

রাস্তায় বেরোলে মন্ত্রীরা ভিক্ষুক খুঁজে পেতেন না। মন্ত্রীরা বলতেন, এই তো আর কিছুদিন পর আমরা কানাডায় রূপান্তরির হবো। কিন্তু এখন শুনি ডাক্তারের পিপিই নেই। ভেন্টিলেটর সোনার হরিণ। রোববার (৫ এপ্রিল) আইইডিসিআরের ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যের ডিজি সামর্থ্যবানদের সহায়তা চেয়েছেন। ঢাকার বাইরে করোনা পরীক্ষার কীট নাই। মধ্যবিত্তের পকেটে টাকা নাই। গরিবের পেটে ভাত নাই। চারদিকে কেবল নাই, নাই, নাই!

তিনি বলেন,  ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করতে সরকার সারাদেশে যেসব চাল বরাদ্দ করেছে ইতোমধ্যেই সেই চাল বিতরণের জন্য তৈরি করা তালিকা নিয়ে দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকাসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বেছে বেছে নিজস্ব লোকজনের মধ্যে চাল বিতরণ করছেন বলে গণমাধ্যমেও খবর বেরিয়েছে। অন্যদিকে গরিব মানুষের মধ্যে ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। ত্রাণের চাল চুরি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সতর্কবার্তা থাকলেও থেমে নেই অপকর্ম।

রিজভী বলেন, দেশের হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে সরকার যে আচরণটি করেছে, এটি কোনো সভ্য রাষ্ট্র কিংবা সভ্য সরকারের আচরণ হতে পারে না। শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অবস্থানগত পার্থক্য সর্বোপরি সমন্বয়হীনতা সংশ্লিষ্ট সবাইকে মর্মাহত করেছে। সরকারের পাশাপাশি এই খাতের উদ্যোক্তাদের নেতৃত্বও চরম দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে। কারখানা খোলা ও বন্ধ রাখা নিয়ে লুকোচুরি খেলা খুবই ন্যক্কারজনক।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার পাঁচটি প্যাকেজে আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের মনে হয়েছে তার এই প্যাকেজগুলো মূলত সরকার সমর্থক শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কম সুদে ব্যাংক থেকে ঋণের সুবিধা দেওয়া। তবে ঋণ দেওয়া তো ব্যাংকের স্বাভাবিক ব্যবসা। এটা তো প্রণোদনা নয়। সুদের হারের কমানো যে অংশটুকু সরকার ভর্তুকি দেবে, প্রণোদনা শুধু সে অংশটুকুই। কাজেই মোট ঋণের সাড়ে ৭২ হাজার কোটি টাকাকেই প্রণোদনা প্যাকেজ হিসেবে দেখানো আসলে মস্ত একটা ভয়ঙ্করের ফাঁকি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এ মহাদুর্যোগে আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা মিথ্যা কথা বলা থেকে সরে আসতে পারেনি। রোববারও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। আপনারা দেখেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল এমনকি ওলামা দল দুস্থ মানুষকে চাল, ডালসহ খাদ্যসামগ্রী, সাবান, জীবাণুনাশক সরঞ্জামাদি সরবরাহ করছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে কিছু অসাধু ব্যক্তি নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। সেই ফেক আইডি থেকে গরিব মানুষদের সাহয্যের নামে বিভিন্নভাবে সহায়তা চাওয়া হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তারেক রহমানের নামে কোন ফেসবুক আইডি নেই।

তিনি কোনো ফেসবুক আইডি পরিচালনা করেন না। মানুষকে প্রতারিত করার জন্য একটি চক্র তারেক রহমানের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে বিভ্রান্তি তৈরির অপচেষ্টা করছে। এ বিষয়ে দেশের জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২০
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।