ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিএনপি

লুটপাটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
লুটপাটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে: রিজভী রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকা: সরকারের রাঘব বোয়ালদের জন্য লুটপাটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘সরকারের রাঘব বোয়ালদের জন্য লুটপাটের সব অর্গল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

যে যেভাবে পারছে লুটে নিচ্ছে। ’

সোমবার দৈনিক পত্রিকায় পড়া একটি নিবন্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই নিবন্ধে লুটপাটের একটি লোমহর্ষক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। একজন ব্যবসায়ী এমপি ২০ কোটি টাকার ঋণের জন্য কোনো এক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর একজন ব্যাংক কর্মকর্তা সেই এমপিকে ২০ কোটির বদলে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করেন। যদিও এমপি সাহেব বলেন, ২০ কোটির জন্য আমার কাগজপত্র প্রস্তুত আছে, কিন্তু ২০০ কোটি টাকা নেয়া সম্ভব নয়। ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, আমরা সব ব্যবস্থা করে দেব। শুধু আমাদের দশ শতাংশ টাকা দিলেই হবে। এই টাকা সরাসরি হংকংয়ে চলে যাবে। ’

তিনি বলেন, ‘এটি একটি ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক নৈরাজ্যেরই ছবি, যা বিদ্যমান চরম রাজনৈতিক অসুস্থতা থেকে উৎসারিত। ’

রিজভী বলেন, ‘দুদক নামের দলকানা এক প্রতিষ্ঠান আছে তারা হারিকেন দিয়ে শুধু বিরোধী দলের লোকজনদের খুঁজতে খুঁজতে দিন-রাত পার করে। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরাই এখন লুটতরাজের একেকজন সর্দারে পরিণত হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলে রেখে সরকারের টপ-টু বটম লুটের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। যেন চারিদিকে শুধু হরিলুটেরই ধুম পড়েছে। বাছাই করা লোকজন দিয়ে খোলা হচ্ছে ব্যাংক। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুয়ায়ী কোনোরকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই এক ব্যাংকের পরিচালকরা আরেক ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছেন ইচ্ছামতো। নামমাত্র ব্যবসায়ী, ব্যাংক পরিচালক, ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা ও আওয়ামী রাজনীতিকের সংঘবদ্ধ চক্র সুকৌশলে লুট করছে ব্যাংকের টাকা। ভুয়া কাগজপত্র মর্টগেজ হিসেবে দেখিয়ে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে যাচ্ছেন এই জালিয়াতরা। আবার কোনো মর্টগেজ ছাড়াই কর্পোরেট গ্যারান্টির নামে দেদারসে ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ’

তিনি বলেন, ‘রোববারও আওয়ামী লীগের এক নেতার নামে অনুমোদন দেয়া হয়েছে বেঙ্গল কমার্শিয়াল নামে একটি ব্যাংকের। এই ব্যাংকগুলো করা হচ্ছে জনগণের পকেট কাটার জন্য। একদিকে যেমন ঋণ নিয়ে চলছে সরকার, পাশাপাশি বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত এবং সেক্টর কর্পোরেশনের উদ্বৃত্ত অর্থ তুলে নিয়ে যাচ্ছে সরকার জোর করে। এর পাশাপাশি শুরু হয়েছে ব্যাংক নিয়ে নতুন খেলা। ’

‘জনগণের প্রতি আস্থা নেই বিএনপির’ সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনাদের দান-খয়রাতের গণতন্ত্রে জনগণকে কোথায় পাঠিয়েছেন তা কি আপনি জানেন? জনগণের প্রতি যখন এতোই আপনাদের আস্থা তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তুলে দিয়ে নিশিরাতের নির্বাচন করছেন কেন?’

একুশে বইমেলা আওয়ামী বইমেলায় পরিণত হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘বইমেলার সার্বজনীনতা হারিয়ে গেছে। বইমেলার সর্বজনগ্রাহ্য সম্ভ্রম ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। বইমেলার বিভিন্ন স্টল আওয়ামীকরণে সজ্জিত করা হয়েছে। বইমেলায় ঢুকলেই মনে হয়-এটি যেন আওয়ামী লীগের কোনো কাউন্সিল অধিবেশন। একদলীয় দুঃশাসনের দুরন্ত প্রভাব পড়েছে চলমান বইমেলায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
এমএইচ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।